সাম্প্রতিক বিক্ষোভের ঘটনায় যে পথে পাকিস্তান সমাধান করেছে, তাতে সিঁদুরে মেঘ দেখছে আমেরিকা। পাকিস্তানের সরকার যে কতটা দুর্বল সেটাও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে দাবি ওয়াশিংটনের। আর এই ঘটনায় উগ্রপন্থা আরও মাথাচাড়া দেবে বলেও মনে করছে মার্কিন প্রশাসন। মুসলিম উগ্রপন্থীদের বিক্ষোভের কাছে মাথানত করে পদত্যাগ করতে হয় পাকিস্তানের আইনমন্ত্রীকে। আর সেই ঘটনাতেই এবার প্রতিক্রিয়া দিল আমেরিকা। মার্কিন প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘পাকিস্তানের সেনা ও উগ্রপন্থীদের মধ্যে সখ্যতার সম্পর্ক দেখা গিয়েছে। এতে পাকিস্তানি উগ্রপন্থা আর উগ্রপন্থীরা আরও বেশি করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। আমরা পাক সেনার ভূমিকা সহ পুরো বিষয়ের উপর নজর রাখছি।’ পাকিস্তানের মত দেশ যেখানে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মৃত্যুর ঘটনা বিরল নয়, সেখানে এই ধরনের ঘটনা যে আরও বেশি করে হবে, সেটাই আশঙ্কা ওয়াশিংটনের। এই ঘটনার জেরে পাকিস্তানে সামরিক অভ্যুত্থানের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না ওয়াশিংটন। তারা বলছে, যে কোন মুহুর্তে পাকিস্তানে সেনা অভ্যুত্থান ঘটতে পারে। ওই মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘সামরিক অভ্যুত্থান হলে তার প্রভাব খুব খারাপ হবে। শুধুমাত্র পাকিস্তান ও আমেরিকার সম্পর্কে প্রভাব পড়বে তাই নয়, তিনি পাকিস্তানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনুমোদন আটকে যাবে।’

বিক্ষোভকারীদেরকে পাক সেনার টাকা দেওয়ার একটি ভিডিও সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। এই ভিডিও রীতিমত বিতর্ক তৈরি করেছে পাকিস্তানে। পাক সেনাই যে সরকারের উপর ছড়ি ঘোরায়, সেটাই আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। গত সোমবারই পদত্যাগ করেন আইনমন্ত্রী। সরকারের সঙ্গে পাক সেনার মুখোমুখি সমঝোতা হওয়ার পরই পদত্যাগ করেন আইনমন্ত্রী। নির্বাচনে প্রার্থীদের নেওয়া শপথের একটি অংশে ‘মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)’ অংশটি বাদ পড়ার পর আইনমন্ত্রী জাহিদ হামিদের বিরুদ্ধে ব্লাসফেমি বা ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে তার অপসারণের দাবি করে একটি উগ্রপন্থী সংগঠন। গত ৬ নভেম্বর থেকে রাজধানীতে বিক্ষোভ করে পাকিস্তানের কট্টর ইসলামপন্থী সংগঠন তেহরিক-ই-লাবাইকের কর্মীরা। এতে কার্যত অচল হয়ে পড়ে ইসলামাবাদ। শনিবার থেকে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ ব্যাপক আকার নেয়। মৃত্যু হয় ছ’জনের। আহত হন শতাধিক মানুষ। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, আহমদিয়া সম্প্রদায়ের জন্য সুবিধাজনক ওই শপথে পরিবর্তন আনা ধর্ম অবমাননার সামিল। যদিও এই ঘটনা একজন ক্লার্কের ভুলে হয়েছে জানিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন জাহিদ হামিদ।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn