সানোয়ার হাসান সুনু, জগন্নাথপুর-নির্বাচনের আর বাকি ২ দিন। অথচ সুনামগঞ্জ – ৩ এর ভোটারদের মধ্যে নেই কোন উত্তাপ। যেন ভাবলেশহীন। সাধারন ভোটারদের মধ্যে তেমন আগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এ আসনে হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন এক জন তিনি হচ্ছেন নৌকার মাঝী পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। অন্য প্রার্থীরা তুলনামূলক দূর্বল। সুনামগঞ্জ – ৩ (জগন্নাথপুর – শান্তিগঞ্জ) এ আসনে  প্রার্থী হয়েছেন মোট ৪ জন। এরমধ্যে জগন্নাথপুর উপজেলায় প্রার্থী রয়েছেন ৩ জন। শান্তিগঞ্জ উপজেলায় ১ জন। এ উপজেলার একমাত্র হেভিওয়েট প্রার্থী পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। টানা ১৫ বছর ধরে জাতীয় সংসদে এ এলাকার প্রতিনিধিত্ব করে যাচ্ছেন তিনি। সুনামগঞ্জের কৃতিসন্তান এম এ মান্নান এ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী হওয়ার পর থেকে জগন্নাথপুর ও শান্তিগন্জ্ঞের চিত্র পাল্টে যায়। এ দুই উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়। পূরো সুনামগঞ্জ জেলায় উন্নয়নের ছোয়া লাগে।

উন্নয়নের বরপুত্র হিসাবে এম এ মান্নানের প্রতি দলমত নির্বিশেষে এ নির্বাচনী এলাকার মানুষের আলাদা একটি সমর্থন রয়েছে। শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় তিনি অনেকটা টেনশন মুক্ত রয়েছেন। বৃহৎ দল বিএনপি ও জামায়াত নির্বাচনে না আসায় নির্বাচনের প্রকৃত জৌলুশ ও উৎসব মূখর পরিবেশ দেখা যাচ্ছে না। নির্বাচনের আর মাত্র ২ দিন বাকী।  কিন্তু জগন্নাথপুর পৌরশহরের গুরুত্বপূর্ণ জনবহুল পৌর পয়েন্টে শুধুমাত্র নৌকার পোষ্টার ব্যতীত অন্য কোন প্রার্থীর পোষ্টার পরিলক্ষিত হয়নি। সাধারন মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে নানা মত রয়েছে। অনেকের মধ্যে আতংকও কাজ করছে। ৯১, ৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ এর নির্বাচনে ভোটারদের মধ্যে যে নির্বাচনী আমেজ ও উৎসব বিরাজ করছিল বর্তমান অবস্থা তার ধারে কাছেও নেই। বর্তমান এক পক্ষীয় নির্বাচন নিয়ে মানুষের তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না।

তবে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করায় নৌকার প্রার্থী বর্তমান এমপি পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নানের ব্যাক্তিগত ভাবে জনপ্রিয়তা রয়েছে সে হিসাবে তিনি সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। বুধবার বিকেলে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নানের সাথে আলাপ হলে তিনি এ প্রতিবেদক কে বলেন, বিগত ১৫ বছর যাবৎ আমি জনগনের সেবা করে যাচ্ছি। জগন্নাথপুর ও শান্তিগন্জ্ঞে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ হয়েছে। দুটি উপজেলা সদর এখন আধুনিক শহরে পরিনত হয়েছে। বড় বড় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। জগন্নাথপুর সদরে একটি মহিলা কলেজ ও মেডিকেল ট্রেনিং সেন্টার করবো, অনেক অসমাপ্ত কাজ রয়েছে, আমার অনেক স্বপ্ন রয়েছে। 

আমার নির্বাচনী এলাকার ভোটারগন আমি এলাকার জন্য কি করেছি তারা সেটা বিবেচনা করে তাদের মূল্যবান রায় দিবেন। আমার বিশ্বাস বিপুল ভোটে আমি বিজয়ী হবো ইনশাআল্লাহ। অন্যদিকে জগন্নাথপুর উপজেলা থেকে রয়েছেন জমিয়ত থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত বর্তমানে তৃনমূল বিএনপির সোনালী আঁশ মার্কার প্রার্থী মাওলনা শাহিনুর পাশা চৌধুরী এডভোকেট। দলচ্যুত হওয়ায় তার ইমেজে ভাটা পড়েছে। বিগত নির্বাচনে বিএনপির মত বড় দলের সমর্থন ও নীজ দল জমিয়তের সমর্থন থাকায় বিপুল ভোট পেয়েছিলেন কিন্তু এবার দল দুটির সমর্থন তো নেই-ই সাধারন অনেক ভোটারের তার প্রতি রয়েছে বিরুপ ধারনা।

এ ব্যাপারে মাওলনা শাহিনুর পাশার সাথে আলাপ হলে তিনি বলেন, আমি নিরবে-নিস্তব্ধে জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জের প্রতিটা এলাকায় গনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছি। ভোটারদের কাছ থেকে বিপুল সাড়া পাচ্ছি। তিনি বলেন, নির্বাচন অবাধ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠ হবে। ইনশাআল্লাহ আমি বিপুল ভোটে জয়লাভ করবো। জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী যুক্তরাজ্য জাপার যুগ্নসম্পাদক সাংবাদিক তৌফিক আলী মিনার। তিনি বলেন, এ আসন থেকে ইতিপূর্বে জাপা থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছেন সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী হুমায়ূন রশীদ চৌধুরী ও তার ভাই অর্থপ্রতি মন্ত্রী ফারুক রশীদ চৌধুরী। এ আসনে লাঙলের বিরাট ভোটব্যাংক রয়েছে। আমি জয়ের লক্ষে গনসংযোগ ও প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছি।

অন্য প্রার্থী হচ্ছেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির মকবুল হোসেন। সম্প্রতি টাকা লেনদেন কে কেন্দ্র করে তিনি কতিপয় লোকের পিটুনির শিকার হলে তাকে গনসংযোগে তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। নৌকা, লাঙল ও সোনালী আশঁ(পাট) প্রতীকের ৩ প্রার্থীকে নির্বাচনী মাঠে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রচারে দেখা গেলেও সারা নেই বিজিপি প্রার্থীর।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn