শান্তিগঞ্জে চুরির অপবাদে কিশোরকে অমানবিক নির্যাতন,হত্যার চেষ্টা
কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ: সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পুর্বপাগলা ইউনিয়নের ঘোড়াডুম্বুর গ্রামে জাল চুরির অপবাদে এক কিশোরকে অমানবিক নির্যাতন করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। প্রতিপক্ষের আঘাতে আহত কিশোরের নাম রোমান মিয়া(১২)। সে ঘোড়াডুম্বুর গ্রামের আব্দুল বারিকের নাতী ও আমির আলীর ছেলে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার(২১ আগষ্ট) বিকাল ৫ টায় উপজেলার ঘোড়াডুম্বুর গ্রামের উত্তরে বরাউট হাওরে। রবিবার (২২ আগষ্ট) দুপুরে আহত কিশোর রোমান মিয়ার মা বিলকিছ বেগম বাদী হয়ে শান্তিগঞ্জ থানায় একই গ্রামের জমির হোসেন সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কিলকিছ বেগম ও জমির হোসেন পূর্ব পরিচিত ও একই গ্রামের লোক। কিলকিছ বেগমের আগের স্বামী আমির আলীর সহিত সংসার ভেঙ্গে গেলে ঘোড়াডুম্বুর গ্রামের জমির হোসেন কিলকিছ বেগমকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় এবং তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিলকিছ বেগম ২০১৯ সনে সৌদি আরবে চলে গেলে জমির হোসেন মোবাইলে তার সাথে যোগাযোগ করতে থাকে। বিলকিছ বেগম সৌদি আরবে ২ বছর ৪ মাস গৃহপরিচারিকার কাজে থাকাবস্থায় জমির হোসেনের নামে ব্যাংকের মাধ্যমে ২ লক্ষ ৯৪ হাজার ৪ চারশত টাকা পাঠিয়ে দেন। সম্প্রতি কিলকিছ বেগম দেশে এসে তাহার পাঠানোর টাকার হিসাব চাইলে জমির হোসেনের সাথে বিলকিছ বেগমের ঝগড়া বিবাদ শুরু হয়। শনিবার(২১ আগষ্ট) বিকাল ৫ টায় উপজেলার ঘোড়াডুম্বুর গ্রামের উত্তরে বরাউট হাওরে নৌকা যোগে মাছ ধরার জাল উঠাইতে গেলে একই গ্রামের জমির হোসেন সহ তাহার আত্মীয় স্বজন জনৈক ছানাই মিয়া, জুবের আহমদ, কবির মিয়া ও জুনেদ আহমদগণ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়া কিলকিছ বেগমের ছেলে রোমান মিয়াকে মারপিট করে পানিতে ফেলে হত্যার চেষ্টা চালায়। পরে রোমান মিয়াকে জমির হোসেন তার বসত বাড়ীতে নিয়ে আটক করে রাখে। তাৎক্ষণিক থানা পুলিশ ঘটনার খবর দিলে পুলিশ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. আক্তার হোসেন, ইউপি সদস্য সাইদুল ইসলামের সহায়তায় রোমান মিয়াকে উদ্ধার করেন।
অভিযোগকারী কিলকিছ বেগম জানান, জমির হোসেন আমার সৌদি আরব থেকে পাঠানো সকল টাকা আত্মসাৎ করেছে। এখন আবার আমার ছেলেকে হত্যা করার চেষ্টা করেছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. আক্তার হোসেন জানান, জাল চুরির অপবাদ দিয়ে রোমান মিয়াকে আটকের খবর পেয়ে আমি দ্রুত ঘটনাস্থরে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করি। তবে হাওরের মধ্যে একা কিশোরকে নির্যাতন করা ঠিক হইনি। শান্তিগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক(এসআই) দেবাশীস সূত্র ধর জানান, কিশোরকে আটকের ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘোড়াডুম্বুর গ্রাম থেকে আহত অবস্থায় রোমান মিয়াকে উদ্ধার করেছি। পরে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) কাজী মোক্তাদির হোসেন জানান, কিশোর নির্যাতনের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানূগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
