সরকার ভয়ঙ্কর খেলায় নেমেছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার জঙ্গিবাদকে রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহার করছে। তারা প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে আন্তরিক নয়। এভাবে দেশকে কোথায় নিয়ে যাবে জানি না। তিনি সরকারকে আগুন নিয়ে না খেলতে আহ্বান জানান। সেইসাথে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, কোনটা সত্য? সম্প্রতি আশকোনায় র‌্যাবের অস্থায়ী একটি ক্যাম্পে জঙ্গি হামলার ঘটনায় গ্রেফতার পরবর্তী মারা যাওয়া মো. হানিফ মৃধার প্রকৃত ঘটনা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছেন তিনি।

আজ সোমবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল প্রশ্ন রেখে বলেন, হানিফের পরিবার বলছে, ডিবি পরিচয়ে কয়েকজন লোক গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকা থেকে তাকে ধরে নিয়ে যায়। অন্যদিকে র‌্যাবের দাবি- আশকোনায় সদর দপ্তরের ফোর্সেস ব্যারাকে আত্মঘাতী হামলার দিন সন্দেহভাজন হিসেবে হানিফকে গ্রেফতার করা হয়। র‌্যাব অফিসে নেওয়ার পর তার বুকে ব্যথা শুরু হলে তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। বিএনপি মহাসচিব বলেন, পরিবার ও র‌্যারের বক্তব্যের মধ্যে কোনটি সত্য? পরিবারের দাবি সত্য হলে আমরা কোন দেশে বাস করছি? সত্য উদঘাটন করতে হবে। অসংখ্য ঘটনা এমন ঘটছে।
ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে ‘স্বাধীনতা সংগ্রামে শহীদ জিয়ার ভূমিকা ও বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট শীর্ষক’ আলোচনা সভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন। ন্যাশনাল পিপলস পাটি (এনপিপি) এই সভার আয়োজন করে। এনপিপির চেয়ারম্যান ও আইনজীবী ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, এনপিপির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ আহমেদ, পিপলস লীগের মহাসচিব সৈয়দ মাহবুব হোসেন, এনপিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য এম অহিদুর রহমান, নজরুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এনপিপির প্রেসডিয়াম সদস্য আ হ ম জহির হোসেন হাকিম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আইন বলছে এক কথা পরিবার বলছে তিন মাস পাঁচ মাস আগে তুলে নেয়া হচ্ছে। তাহলে কি জঙ্গিবাদকে প্রকাশ করার জন্য তাদেরকে হত্যা করা হচ্ছে। খিলগাঁওয়ে যুবক নিহত হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মটরসাইকেলে নিরাবিলি জায়গা দিয়ে যাচ্ছিল যুবক। অথচ মটরসাইকেলে গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়নি। সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্ত দরকার। এসবের উদ্দেশ্য কি?
তাভেল্লা সিজার হত্যাকান্ডের প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ঘটনাটি ঘটার পর নিউইয়র্ক থেকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন বিএনপি নেতারা এর সঙ্গে জড়িত। কিন্তু র‌্যাব বলছে নব্য জেএমবিরা ঘটনাটি ঘটিয়েছে। কোনটা সঠিক? সরকারের প্রতি জনগণের আর কোনো আস্থা থাকতে পারেনা জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার ভয়ঙ্কর খেলায় নেমেছে। দেশকে কোথায় নিয়ে যাবে জানি না। আগুন নিয়ে খেলবেন না। সরকারজঙ্গিবাদকে রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহার করছে। তারা প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে আন্তরিক নয়। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফর নিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা তিস্তার পানি চাই। ফারাক্কার পুনরাবৃত্তি চাই না। অভিন্ন ৫৪ টি নদীর ন্যায় সঙ্গত দাবি যাতে পাই সেটা নিয়ে আলোচনা করুন। সীমান্তে যাতে বেআইনীভাবে হত্যা না হয় সেটা নিশ্চিত করুন। স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন ও জাতীয় স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে নয়। আমরা শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে হলেও স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবো।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn