প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বর্তমানে লন্ডন সফর নিয়ে যুক্তরাজ্য আ’লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনা চলছে সম্মেলন নিয়ে। গত ২৯ জানুয়ারি সাত বছর পূর্ণ হয়েছে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের। একই সময়ে দুই বছর পরপর যুক্তরাজ্য বিএনপি তিনটি কমিটি গঠন করে। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগে সর্বশেষ ২০১১ সালে সম্মেলনে সুলতান মাহমুদ শরীফকে সভাপতি ও সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুককে সাধারণ সম্পাদক করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে তিন বছরের জন্য এই কমিটি ঘোষণা করেন। তবে কমিটির মেয়াদের চার বছর অতিক্রম হলেও নতুন করে কমিটি কিংবা সম্মেলন হচ্ছে না। নতুন কমিটি কবে হবে, তাও জানা নেই সিনিয়র নেতাদের। কমিটির বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতার পদ শূন্য ও একাদিক নেতা দেশে নির্বাচনের জন্য ঘনঘন যাওয়া আসা করায় কিছুটা স্থবিরতা দেখা দিয়েছে বলে মনে করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেতাকর্মীরা। তিন বছর পর যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও কমিটির মেয়াদের চার বছর অতিক্রম করেছে। এর আগের কমিটিও ছিল দীর্ঘ ১২ বছর। তবে প্রধানমন্ত্রী যেদিনই সময় দেবেন সেদিনই সম্মেলনের জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরিফ। তিনি বলেন,  সম্মেলন হলে নতুন নেতৃত্ব বের হয়ে আসবে। যারা কাজ করছে না, তাদের জায়গায় নতুনদের স্থান দেয়া যাবে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে দলীয় সভাপতির উপর। তিনি সময় দিলেই সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি আসবে। এদিকে আ.লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করায় অনেকেই আশা করছে এবার হয়তো যুক্তরাজ্য আ’লীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হবে।
জানা গেছে, ১০১ সদস্যবিশিষ্ট যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্যের সংখ্যা ৪১ জন। এদের মধ্যে ১০-১৫ শীর্ষ নেতা নিস্ক্রিয়। আর সহ-সভাপতি রহিমা খানম মহিলা এমপি নির্বাচিত হয়েছেন, প্রচার সম্পাদক, সাংস্কৃতিক সম্পাদকের পদসহ বেশকিছু পদ শূন্য রয়েছে। তাছাড়া বেশ কয়েকজন নেতা দেশে নির্বাচনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের অধিনস্থ লুটন আওয়ামী লীগ ১৫ বছর, নিউপোর্ট আওয়ামী লীগ ১৫ ও ইস্ট লন্ডন আওয়ামী লীগের ৮ বছরসহ একাদিক জোনাল কমিটির সম্মেলন সময়মত হচ্ছে না বলেও জানা গেছে। এরপরও কমিটিতে স্তবিরতা কিংবা নিস্ক্রিয়তা নেই বলে মনে করেন দলের দপ্তর সম্পাদক শাহ শামীম আহমদ। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নবীন-প্রবীনের সমন্নয়ে গঠিত। প্রবীনদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে যুক্তরাজ্যে আওয়ামী লীগ তাদের সকল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এখানে দ্বন্দ্ব কিংবা কলহ নেই। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করেন দলের নেত্রী শেখ হাসিনা। তাই তিনি যখনই বলবেন তখনই যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ প্রস্তুত রয়েছে সম্মেলন আয়োজনের। এদিকে আরেক সূত্র জানায়, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের মতো এর অঙ্গ সংগঠন যুক্তরাজ্য যুবলীগ ও ছাত্রলীগও চলছে মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে। আওয়ামী লীগের সাথে তাদের কমিটিও সাত বছর যাবৎ কোন সম্মেলনের মুখ দেখেনি। আর এ মাসেই শেষ হচ্ছে যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটির মেয়াদ। নতুন করে গঠিত কৃষকলীগ ও তাঁতি লীগের আহবায়ক কমিটি দিয়ে গত এক বছরের অধিক সময় ধরে চলছে তাদের কার্যক্রম। তবে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠনের কোন লক্ষণ নেই। গত কয়েক বছর আগে শ্রমিকলীগের কেন্দ্র থেকে ঘোষিত একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়েছিল। কিন্তু পূর্ব কোন ঘোষণা ছাড়াই আগের আহবায়ক কমিটি বাদ দিয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় কমিটি নতুন করে একটি কমিটি ঘোষণা দেয়। এতে দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়ে যুক্তরাজ্য শ্রমিকলীগ। সব মিলিয়ে যুক্তরাজ্য আ’লীগের অবস্থা এখন হ-য-ব-র-ল।
-ঢাকাটাইমস২৪ডটকম’র সৌজন্যে

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn