মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নির্যাতন দমনে তেমন পদক্ষেপ না নেওয়ায় দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিকে দেওয়া সম্মানসূচক মানবাধিকার পদক প্রত্যাহার করেছে যুক্তরাষ্ট্রের হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়াম। গতকাল বুধবার মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ এক চিঠিতে বলে, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি দেশটির সেনাবাহিনীর ‘গণহত্যার পক্ষে পাহাড় সমান প্রমাণ’ থাকার পরও সু চির নিষ্ক্রিয়তার কারণে মিউজিয়াম এই পদক ফিরিয়ে নিল।’ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসিদের নৃশংসতার শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে প্রতিষ্ঠিত ওয়াশিংটনের এই জাদুঘর। মিয়ানমারে ‘গণতন্ত্রপন্থী’ নেত্রী হিসেবে পরিচিত সু চিকে ২০১২ সালে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে সম্মানজনক এলি ওয়াইজেল পদক দেওয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসিদের নির্যাতন থেকে বেঁচে যাওয়া এলি ওয়াইজেলের নামে এই পদকের নাম করা হয়। তাঁকে প্রথম এই পদক দেওয়া হয়েছিল। জীবনের বেশির ভাগ সময় তিনি ব্যয় করেছেন মানবাধিকার আন্দোলনে। ১৯৮৬ সালে তিনি নোবেল পুরস্কার পান। তিনি ছিলেন এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। সু চিকে এক চিঠিতে মিউজিয়াম লিখেছে, ‘২০১৬ ও ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের প্রতি সেনাবাহিনীর নির্যাতনের ঘটনায় আমরা আশা করেছিলাম আপনি (সু চি) এর নিন্দা জানাবেন এবং সেনাবাহিনীর এই বর্বর এই নির্যাতন অভিযান দমন করবেন। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করবেন।’এর বদলে সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি এ ঘটনায় তদন্তকাজে জাতিসংঘকে সহায়তা করাতে অস্বীকৃতি জানায় এবং রোহিঙ্গাবিরোধী তৎপরতায় ইন্ধন জুগিয়েছে। এমনকি দলটি সাংবাদিকদের সেখানে গিয়ে খবরও সংগ্রহ করতে বাধা দিয়েছে। গত নভেম্বরে মিউজিয়াম ও দক্ষিণ এশিয়াভিত্তিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা ফোর্টিফাই রাইটস মিয়ানমারের মাঠপর্যায় থেকে যেসব তথ্য পেয়েছে, সেখানে দেখা গেছে, রোহিঙ্গাদের প্রতি ব্যাপক ও সংঘবদ্ধ নির্যাতন চালানো হয়েছে। এর ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn