জাহাঙ্গীর আলম ভুঁইয়া-
সুনামগঞ্জ জেলায় কৃষি বিভাগে জনবল সংকটের কারনে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির পরির্বতনের সুফল ভোগ করতে পারছেন না হাওরপাড়ের কৃষকগন। যার ফলে প্রতি বছর নানান দূর্যোগের মোকাবেলা করতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছে জেলার প্রত্যন্ত এলাকার কৃষকগন। জেলার ১১টি উপজেলায় কর্মকর্তা ও উপ-সহকারী কর্মকর্তার পদে শুন্যতা বিরাজ করছে র্দীঘ দিন ধরে। ফলে জেলার কৃষি বিভাগ থেকে কাংক্ষিত সেবা না পেয়ে বোরো ফসল সহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখতে পারছেন না বোরো ধান উৎপাদনে সমৃদ্ধ সুনামগঞ্জের হাওর পাড়ের লাখ লাখ কৃষকগন। জানাযায়, জেলার তাহিরপুর, দিরাই, শাল্লা, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, মধ্যনগর, বিশ্বাম্ভরপুরসহ ১১টি উপজেলায় কর্মকর্তা ও বিশেষ করে উপ-সহকারী কর্মকর্তা না থাকায় চরম দূভোর্গে রয়েছে কৃষকরা। ঐসব কর্মকর্তাগন প্রথমে সুবিধা মত এলাকায় নিয়োগ না পেয়ে যোগদান করেই বদলী হওয়ার জন্য উঠে পরে লেগে বদলীও হয়ে যায় নিজেদের পছন্দ মত এলাকায়। ফলে শুন্যতা বিরাজ করছে জেলার সব্যত্রই। ফলে কৃষি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কৃষি প্রযুক্তি বিষয়ক সঠিক সময়ে সঠিক পরামর্শ না পাওয়ায় মান্দাতা আমলের চাষাবাদ প্রদ্ধতিই অনুসরন করার কারনে এক ফসলী বোরো জমি চাষাবাদ করতে গিয়ে বীজ,কীটনাশক ও সারের বিষয়েও কোন মনিটরিং না থাকা,চারা লাগানো থেকে শুরু করে ধান কাটা পর্যন্ত প্রতি বছরই বন্যা,শিলা বৃষ্টি,খড়া ও পোকার আক্রমনে জমির ধান নষ্ট হয়। এছাড়াও হাওরাঞ্চলের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগন (ব্লক সুপার ভাইজার) যারা কর্মরত আছেন তারা সাপ্তাহে ৫দিন মাঠে গিয়ে কৃষকদের সকল সমস্যা ও সমাধান নিয়ে কাজ করার কথা থাকলেও তা সঠিক ভাবে পালন করছে না অনেকেই। যাদের মধ্যে ওয়ার্ড প্রর্যায়ে যাদের অবস্থান করার কথা সেখানে অবস্থান না করে বেশির ভাগ সময় উপজেলা সদরে কর্মরত ও শহরে অবস্থান করে পরিবার পরিজন নিয়ে অভিযোগ রয়েছে কৃষকদের। সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারন কার্য্যালয় সূত্রে জানাযায়,জেলার জেলা কৃষি সম্প্রসারন প্রধান কর্মকর্তা পদ শুন্য,জেলা প্রশিক্ষন কর্মকর্তা ২জন,কর্মরত আছে ১জন,অতিরিক্ত উপ-পরিচালক ৩টি পদের ৩টিই শুন্য রয়েছে। এছাড়াও ১১টি উপজেলায় অফিসার প্রর্যায়ে ৫জনে কর্মকর্তার স্থলে কর্মতর আছেন ১জন। জেলায় ১১টি উপজেলায় উপ-সহকারী কর্মকর্তার পদ রয়েছে ২৬৩টি আর কর্মরত আছে ১০৮জন। ফলে জেলায় কর্মকর্তা ও নির্দিষ্ট এলাকায় উপ-সহকারী কর্মকর্তাগন না থাকায় ও প্রয়োজনীয় কৃষি পরামর্শের অভাবের কারনে ফসল উৎপাদনে নানান সমস্যার সম্মক্ষিন হচ্ছে হাওরাঞ্চলের লাখ লাখ কৃষক। তাহিরপুর উপজেলার হাওরপাড়ের কৃষক সাদেক আলী,রমজান আলী,সবুজ মিয়াসহ জেলার বিভিন্ন হাওরপাড়ের কৃষকগন জানান,আমরা কৃষি অফিসের কোন লোকের পরমার্শ পাই না। যার জন্য আমরা আমাদের মত করে পৈতিক ভাবে শেখা পদ্ধতি আর বেশি ভাগ সময় বিভিন্ন বাজারে কিটনাশক,সার বিক্রেতাদের কাছ থেকেই কৃষি বিষয়ে পরার্মশ নিয়ে জমিতে কিটনাশক,সার দিয়ে থাকি এবং অন্যান্য বিষয়ে সমাধান করি। কৃষি অফিসের লোকজনের মাধ্যমে আধুনিক যুগপযোগী সঠিক পরামর্শ পেলে আমরা লাভবান হতাম। পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সাধারন সম্পাদক পিযুস পুরকাস্ত টিটু,ব্যবসায়ী আবুল কালাম,রফিকুল ইসলাম ও জেলার সচেতন হাওরবাসী বলেন-কৃষি একটি দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি,পরিবর্তিত আবহাওয়া ও জলবায়ুর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে না পারায় ফসল উৎপাদনে ব্যাগাত ঘটছে প্রতি বছর। ফলে এজেলায় গত কয়েক বছর ধরেই অকাল বন্যায় বোরো ধান সহ অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতির শিকার হচ্ছে। তার পরও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে উদ্ভাবিত নতুন নতুন কৃষি প্রযুক্তি দ্রুত কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে গ্রাম প্রর্যায়ে উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে তাদের নির্ধারীত স্থানে অবস্থান করতে বাধ্য করতে হবে। তাহলে কৃষি ক্ষেত্রে সফলতা আসবে। তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস ছালাম বলেন-এ উপজেলায় জনবল সংকট প্রধান সমস্যা। যার জন্য কৃষকদের সহায়তায় আমরা যারা আছি তারাই কোন রখমে কৃষি সেবা দিয়ে যাচ্ছি স্বার্ধমত। প্রয়োজনীয় জনবল থাকলে কৃষকদের সঠিক সময়ে সঠিক পরার্মশ দিতে সমস্যা হত না। জনবল শূন্যতার বিষয়ে উধর্বতন কর্মকর্তাদের বার বার জানানো হয়েছে। সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) স্বপন কুমার বলেন,জনবল সংকট জেলা ও সকল উপজেলায় রয়েছে। জনবল সংকটের বিষয়ে উধর্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি মাসেই লিখিত ভাবে জানানো হচ্ছে। জনবল সংকট না থাকলে কৃষকদের সঠিক ভাবে সঠিক পরামর্শ,সঠিক সময় দিতে পারতাম। জনবল না থাকায় এখন সমস্যা হচ্ছে। আমাদের জনবল কম তারপরও যারা কর্মরত আছেন তারা তাদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করছে। যারা দায়িত্ব পালন করবে না তাদের বিরোদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn