আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠেয় সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন ১১ জন। তাদের মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন প্রার্থী ৪ জন, বাকি ৭ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ এপ্রিল থেকে সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ শুরু করেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ২৭ দিনে মেয়র পদে মোট ১১ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে সবাই জমা দিয়েছেন।

সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের মিডিয়া সেল (সিটি নির্বাচন) কর্মকর্তা সৈয়দ কামাল হোসেন জানান, মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন ১১ জন। এর মধ্যে দলীয় প্রতীকের প্রাথী ৪ জন। তারা হলেন- মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (আওয়ামী লীগ), নজরুল ইসলাম বাবুল (জাতীয় পার্টি), হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান (ইসলামী আন্দোলন) ও মো. জহিরুল আলম (জাকের পার্টি)।

মনোনয়ন দাখিল করা স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীরা হলেন- মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু, মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান খান, সামছুন নুর তালুকদার, মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন, মাওলানা জাহিদ উদ্দিন চৌধুরী, মো. শাহজাহান মিয়া ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ছাড়াও চারটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও ধারণা করা হচ্ছে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীদের মধ্যেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এই তিন প্রার্থীর মধ্যে শিক্ষাগত যোগ্যতায় এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসান। তারা দুজনই স্নাতক ডিগ্রিধারী। অপর প্রার্থী জাতীয় পার্টির মো. নজরুল ইসলাম (বাবুল) হলফনামায় নিজেকে ‘স্বশিক্ষিত’ বলে দাবি করেছেন।

নির্বাচন কমিশনে (ইসি) মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে প্রার্থীর ব্যক্তিগত তথ্যের পাশাপাশি তাদের আয়, আয়ের উৎস, স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, শিক্ষাগত যোগ্যতা, মামলা, দেনাসহ বেশ কিছু তথ্য দিতে হয়। প্রার্থীদের হলফনামা ঘেঁটে শিক্ষাগত যোগ্যতার এসব তথ্য পাওয়া গেছে। তিনজন প্রার্থীই নিজেদের ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিয়েছেন। আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে কোন ফৌজদারি মামলা না থাকলেও অপর দুই প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা ছিল এবং এখনো আছে।

জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটা মামলা তদন্তাধীন। এ ছাড়া অতীতে তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হলেও সেগুলো থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে বর্তমানে কোন মামলা না থাকলেও অতীতে তার বিরুদ্ধে একটা মামলা ছিল, এবং সেই মামলায় তিনি বেকসুর খালাস পেয়েছেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন ইভিএমে হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ছিল গতকাল (২৩ মে)। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২৫ মে। আর ১ জুন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে।

২০০২ সালে প্রতিষ্ঠার পর সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রথম ও দ্বিতীয় নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। ২০১৩ সাথে তৃতীয় ও ২০১৮ সালে চতুর্থ নির্বাচনে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। চারটি নির্বাচনেই মূল প্রতিদ্বদ্বিতা হয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে। এবার বিএনপিদলীয় মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn