বাংলাদেশের সবচেয়ে গৌরবময় অধ্যায় হচ্ছে স্বাধীনতাযুদ্ধ। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অসংখ্য প্রামাণ্য, স্বল্পদৈর্ঘ্য এবং পূর্ণদের্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। এসব চলচ্চিত্র দেশের বাইরেও বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এক বছরের মধ্যেই ১৯৭২ সালে মুক্তি পায় চারটি চলচ্চিত্র। এগুলো হলো-চাষী নজরুল ইসলামের ‘ওরা ১১ জন’, সুভাষ দত্তের ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’, মমতাজ আলীর ‘রক্তাক্ত বাংলা’ এবং আনন্দের ‘বাঘা বাঙ্গালী’। ১৯৭২ সালে মুক্তি পেয়েছিল সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’ চলচ্চিত্রটি।১৯৭৬ সালে হারুন-অর রশিদ নির্মাণ করেন ‘মেঘের অনেক রং’। সাংবাদিক ও চলচ্চিত্রকার শহীদুল হক খান সরকারি অনুদানে ১৯৮১ সালে নির্মাণ করেন ‘কলমীলতা’। ১৯৯৪ সালে নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ নিজের লেখা গল্পে নির্মাণ করলেন ‘আগুনের পরশমনি’। ৪৫ বছর ধরে বাংলাদেশে নির্মিত হয়েছে বেশকিছু মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র। অন্যতম এই চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘ওরা ১১ জন’, ‘হাঙ্গর নদী গ্রেনেড’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘রক্তাক্ত বাংলা’, ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’, ‘ধীরে বহে মেঘনা’, ‘আবার তোরা মানুষ হ’, ‘আলোর মিছিল’, ‘নদীর নাম মধুমতি’,‘ মুক্তির গান’, ‘জয়যাত্রা’, ‘খেলাঘর’, ‘আমার বন্ধু রাশেদ’, ‘গেরিলা’, ‘জীবনঢুলী’, ‘৭১-এর সংগ্রাম’, ‘মেঘমল্লার’, ‘৭১-এর মা জননী’, ‘অনিল বাগচীর একদিন’ ইত্যাদি। তবে বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের কাহিনী নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের সংখ্যাটা কমেছে। তাই অনেক নির্মাতার মতে, চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকার যে অনুদান দেয় তাতে একটি মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্র নির্মাণ সম্ভব হয় না। এর ফলে দেশাত্মবোধক চলচ্চিত্র নির্মাণে নির্মাতাদের আগ্রহ কমে যাচ্ছে। সরকারী এই অনুদানের অঙ্কটা বাড়ানোর বিষয়েও কর্তৃপক্ষকে বিশেষ নজর দেয়ার অনুরোধ জানান এই প্রজন্মের বেশ কিছু নির্মাতা।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn