ঢাকা: বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের ৩৭ বছর পেরোলেও বেশির ভাগ গণমাধ্যমের কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত সহযোগিতা পাননি বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উল্টো তাঁর বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে সমালোচনা বেশি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ ছাড়া বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলের অত্যাচার নিয়ে তেমন লেখালেখি হয় না বলেও অভিযোগ সরকারপ্রধানের। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।পত্রিকার নাম উল্লেখ না করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন, দুটি পত্রিকা আমি পড়িও না, রাখিও না। আমার গণভবনে ঢুকতেও দিই না। দরকার নেই আমার। কাজের মধ্য দিয়েই জনগণই জেনে নেবে। কাজের মাধ্যমেই আমি থাকব। আওয়ামী লীগ থাকলে কী হয় আর না  থাকলে কী হয়, তা দেশের মানুষ বোঝে।’ তাঁকে সব সময় সমালোচনার মধ্যে থাকতে হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সে অনুযায়ী  বি এনপির নির্যাতনের কথা গণমাধ্যমে উঠে আস েনি।শেখ হাসিনা বলেন, ‘কত পত্রিকা আমাদের বিরুদ্ধে লিখেছিল,  কিন্তু ক ী দুর্নীতি প্র মাণ করতে পেরেছে? যারা এসব কথা লিখেছে, তাদের কী করা উচিত? এটাই কি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা? আমি বলেছিলাম, কোথায় দুর্নীতি হয়েছে, তা প্রমাণ করতে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক প্রমাণ করতে পারেনি। কানাডার ফেডারেল কোর্ট বলেছে, এসব বানোয়াট।’বাংলাদেশ নিজের টাকায় পদ্মা সেতু করছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন অনুযায়ী দেশ নিজের পায়ে নিজের মাটিতে দাঁড়িয়েছে। এ সময় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রসঙ্গে বিভিন্ন সমালোচনার জবাব দেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘কত কথাই তো তারা বলে। নিজেদের মাথায় ঘিলু-টিলু কম থাকলে কত কথাই তো তারা বলতে পারে। সাবমেরিন নিয়েও অনেক কথা শুনতে হয়েছে।’প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতুর স্প্যান ওঠার পর পত্রিকায় লেখা হলো। সেই কথা শুনে একজন বলে ফেললেন, জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানানো হচ্ছে, কেউ ওই সেতুতে উঠবেন না। আমি দেখব, সেতু হওয়ার পর তারা ওই সেতুতে ওঠেন কি না।’যারা স্যাটেলাইট সম্পর্কে কিছুই বোঝে না, তারা ক্ষমতায় গেলে দেশের কী উন্নয়ন হবে, সে সম্পর্কে প্রশ্ন রাখেন প্রধানমন্ত্রী।বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রার কাছে পৌঁছে গেছে বলে জানান শেখ হাসিনা। এ ছাড়া তৃণমূল থেকে যেন উন্নয়ন হয়, সে লক্ষ্যে কাজ করছেন বলে জানান তিনি। সাংবাদিকরা যেন দেশের মানুষের কল্যাণ আর উন্নয়নের কাজগুলো তুলে ধরেন, সে অনুরোধ করেন শেখ হাসিনা।এ সময় স্বাধীনতা নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে দেওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বক্তব্যের পুনারবৃত্তি করেন প্রধানমন্ত্রী।আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে দেশে কী ধরনের পরিস্থিতি হয়, সে স্মৃতি মনে করতে বলেন শেখ হাসিনা। স্বাধীনতার চেতনায় বাংলাদেশ গড়ে উঠবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।২০৪১ সালে বাংলাদেশকে কেমন দেখতে চান, সে পরিকল্পনার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিটি গ্রাম, প্রতিটি ইউনিয়নের মানুষ নাগরিক সুবিধা ভোগ করবে এমন পরিকল্পনা করছেন বলে জানান। আর এ ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn