খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তাদের দাবি মেনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বহির্বিশ্বে জোর লবিং চালাচ্ছে বিএনপি। তবে এ ব্যাপারে আগের মতোই কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার। এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক কোনো শক্তির চাপকে গুরুত্ব দেবে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এমনকি আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে এ ব্যাপারে কোনো বক্তব্য বা চাপ এলে পাল্টা বক্তব্য তুলে ধরার প্রস্তুতিও রেখেছে সরকার। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, গত নির্বাচনের আগেও বিএনপি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও প্রভাবশালী দু’একটি রাষ্ট্রের কাছে ধর্ণা দেয়। নির্বাচন বর্জনের পর ওই নির্বাচন বন্ধের জন্য সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। তখন আন্তর্জাতিক কোনো কোনো মহল থেকে নির্বাচন নিয়ে সরকারের উপর সরাসরি চাপও আসে। কিন্তু কঠোর অবস্থানে থেকে সেই চাপ উপেক্ষা করেই দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ।

এবারও এ ধরনের চাপ আসতে পারে বলে ধারণা করছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা।  দায়িত্বশীল ওই নেতাদের স্পষ্ট বক্তব্য, বাংলাদেশের নির্বাচন হবে এদেশের সংবিধান অনুযায়ী। বাইরের কোনো শক্তির পরামর্শে বা চাপের কাছে নতি স্বীকার করে কোনো কিছু হবে না। গতবছর নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের আগে কয়েকটি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা বিষয়টিতে তাদের মতামত দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার অনুমতি চেয়েছিলো। কিন্তু এ দেশের নির্বাচন ও নির্বাচন সংক্রান্ত যে কোনো বিষয়কে বাইরের হস্তক্ষেপ মুক্ত রাখতে আওয়ামী লীগের অবস্থান দৃঢ়। সে কারণেই সরকার তখন বিদেশিদের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেয়নি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, এদেশের নির্বাচনের ব্যাপারে এদেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। বিএনপি যতই বিদেশি প্রভুদের কাছে ধর্ণা দিক কোনো লাভ হবে না। গত নির্বাচনের আগেও তারা এটা করেছিলো, কিছুই করতে পারেনি। এবারও পারবে না। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। এটা মেনেই বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হবে। খালেদা জিয়ার সাজা হয়েছে সেটা আইনি বিষয়। তিনি জেল থেকে জামিন পাবেন কী, পাবেন না সেটাও আইনি বিষয়।  এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আগে বিদেশিরা রাজনীতিতে বা বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশের উপর হস্তক্ষেপ করতো। কিন্তু এখন আর সেটা পারে না। বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেক স্বয়ংসম্পূর্ণ, বাজেটও বিদেশিদের উপর নির্ভরশীল না। আমরা তো মনে করি বিএনপি নির্বাচনে আসবে। ‘বিএনপিকে নিয়েই নির্বাচন হবে, এটা আমরা চাই। খালেদা জিয়া জেলে থাকলেও বিএনপি আসবে, জেলে না থাকলেও আসবে বলে আমার ধারণা। আর খাদেলা জিয়ার সাজা তো রাজনৈতিক কোনো কারণে হয়নি, দুর্নীতির দায়ে হয়েছে। বিদেশিরা এ ব্যাপারে কী বলবে।’ এই নেতা আরও বলেন, দুই জার্মানি এক করার পর জার্মানির সাবেক চ্যাঞ্চেলর হেলমোট কোল তিন মাস জেল খেটেছিলেন। ভারতের একজন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ লালু প্রসাদ যাদব জেল খেটেছেন। খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার পর পাকিস্তান ছাড়া আর কোনো দেশ তো কোনো মন্তব্য করেনি।

সূত্র: বাংলানিউজ

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn