হাসান হামিদ–

শুরু করবো একটি ঘটনা দিয়ে। আমরা জানি, প্রতিবছরই জাতিসংঘের সাধারন পরিষদ অধিবেশন চলাকালেই ‘গ্লোবাল সিটিজেনশীপ এওয়ার্ড’ নামে সম্মানজনক একটি পুরষ্কার দেওয়া হয়। এ বছর এই পুরষ্কারটি পেয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ‘গ্লোবাল সিটিজেনশীপ এওয়ার্ড’ নিয়ে যখন জাস্টিন ট্রুডো নিউইয়র্ক থেকে নিজ দেশে ফেরেন,আমরা সংবাদ মাধ্যমে পড়েছি, তার জন্য কোনো সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়নি। সেখানকার সংসদে, দলে কিংবা মিডিয়ায় এ বিষয় নিয়ে কোনো উচ্ছাস চোখে পড়েনি। অথচ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সাধারন অধিবেশনে বক্তৃতা করে, অবকাশ কাটিয়ে দেশে ফিরছেন কিছুদিন আগে। সেদিন বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত লোকসমাগম করে তাকে সংবর্ধনা দিল আওয়ামী লীগ। আমি বুঝি না, বাড়ীর গৃহকর্তা নিজ বাড়িতে ফিরবেন- তাকে সংবর্ধনা দিতে হবে কেন? সংবর্ধনা ছাড়াও তো তিনি বাড়ির কর্তাই। তাই নয়?

আমরা এটা জানি যে, সাধারণত সংবর্ধনা বিষয়টা হয় কেউ বিজয়ী হয়ে ফিরলে। যেমন বঙ্গবন্ধু ফিরেছিলেন পাকিস্তান থেকে। যেমন নোবেল নিয়ে ফিরেছিলেন ডক্টর ইউনূস। কিন্তু এবার আমাদের প্রধানমন্ত্রীর অর্জন কি সংবর্ধনা দেওয়ার মতো কিছু? আর বেগম জিয়ার এবার অর্জন কী? এবার তো তিনি ব্যক্তিগত কাজে বিদেশে গিয়েছিলেন। বিলেতে থাকা পুত্র ও পরিবারের সঙ্গে একান্তে সময় কাটিয়ে ফিরলেন, সেখানে সংবর্ধনার যুক্তিটা কোথায়? আমি চাটুকার নই, আমি যদি রাজনীতিও করি কোনোকালে সহজ সত্যকে বলে দেবো। আর এ কারণেই রাজনীতি হবে না। রাষ্ট্রনীতি আর বিজ্ঞান জেনে এদেশে পদ পদবী মেলে না, মেলে পা চেটে। আফসোস, যারা চাটুকার হয়ে রাজনীতিবিদ বলে নিজেদের পরিচয় দিয়ে থাকেন।

তবে অন্য সবখানে অমিল আর মারামারি থাকলেও এই কালচার বা সংস্কৃতিতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কী অসাধারণ মিল! জেনারেল এরশাদ, জেনারেলপত্নী খালেদা জিয়া, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা– সবার ব্যাপারে আমরা এ কাজে সমান উৎসাহী। আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে, সংবর্ধনার জন্য যানজটের শহর ঢাকায় বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে গেলে শহরের অবস্থাটা কি হবে? নাগরিকদের কি অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হবে- সেটা কি সংবর্ধনার আয়োজকরা বিবেচনায় নিয়েছিলেন? আমি আশা করেছিলাম, আমাদের প্রধানমন্ত্রী হয়তো এই সংবর্ধনা বন্ধ করতে বলবেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বিনয়ের সাথে তবু বলি, আমরা কি এই ‘সংবর্ধনা সংস্কৃতি’ থেকে বেরিয়ে আসতে পারি না?

বাঙালি হিসেবে আমাদের রয়েছে নিজস্ব রাজনৈতিক সংস্কৃতি;  যা আবহমান বাংলায় বসবাসরত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের জীবনাচারের বিভিন্ন দিক থেকে প্রতিফলিত। কিন্তু এ সংস্কৃতি যদি জনমুখী না হয়ে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে জনদুর্ভোগে পর্যবসিত হয়, সংস্কৃতি যখন জাতিস্বার্থের বিপরীতে ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থের হাতিয়ার হয়ে ওঠে; তখন তা নানা ভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।  বাস্তবতা হলো, আমাদের দেশের রাজনীতিকেন্দ্রিক সংস্কৃতির বেশিরভাগই যতটুকু না জনস্বার্থে-জনকল্যাণে; তার চেয়ে বেশি ব্যক্তিস্বার্থ এবং দলীয় ক্ষমতা প্রদর্শনের হাতিয়ার হিসেবে উদযাপিত হয়ে থাকে। এ এক চরম বাস্তবতা। এবার ইতিহাস কী বলে দেখি।  অতীতে বড় ধরনের পুরস্কার প্রাপ্তি,  নতুন কিছু আবিষ্কার কিংবা জনদাবি আদায়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সংগ্রামে আটক নেতাদের মুক্তি, বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা, ক্রীড়া বা সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে আর্ন্তজাতিক সম্মান লাভ ইত্যাদি কারণে রাষ্ট্র বা দেশের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সেই সব কৃতির সম্মান জানাতে দলীয় কিংবা রাষ্ট্রীয়ভাবে আয়োজন করা হতো সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের। কিন্তু আমাদের দেশে ওই সংস্কৃতিই এখন ব্যাপকার্থে ‘গণসংবর্ধনা সংস্কৃতি’তে রূপ লাভ করেছে। রাজনৈতিক দল, সামাজিক দল, বিভিন্ন করপোরেট গোষ্ঠী এমনকি পাড়া-মহল্লায়ও বিশেষ ক্ষেত্রে অবদানের জন্য কিংবা নিজেদের ঢোল নিজেরা পেটানোর জন্য বছরের বিভিন্ন মৌসুমে সংবর্ধনা সংস্কৃতির আয়োজন করে। নির্বাচনে বিজয়ী রাজনৈতিক নেতাদের সংবর্ধনা প্রদানের বিষয়টি হরহামেশা ঘটতে দেখা যায়। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ক্লাব বা সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মন্ত্রী, এমপি কিংবা শিল্পপতিকে সংবর্ধনা প্রদান করে কিছু প্রাপ্তি নিশ্চিত করতেও সংবর্ধনা সংস্কৃতি চলে আসছে।

ভেবে বিস্মিত হতে হয়, আমরা এমন একটা দেশে বাস করি- যে দেশে জেল ফেরত সাজাভোগ করা কয়েদির জামিন,  মুক্তি কিংবা অন্য কোনো কারণেও তাকে ফুলের মালা গলায় পরিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে বরণ করা হয়। তার সংবর্ধিত ওই লোকটি যদি রাজনীতির সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে যুক্ত থাকেন, তাহলে পোয়াবারো। সংবর্ধনা পেয়ে লোকটি একেবারে নেতা হয়ে ওঠেন। দেখা যায়, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের ব্যক্তিগত বিদেশ ভ্রমণকালে কিংবা বিদেশ থেকে আগমনে দলীয় নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে দেয়া হয় ব্যাপক গণসংবর্ধনা। এসব সংবর্ধনার যাঁতাকলে পিষ্ট হতে হয় দেশের সাধারণ মানুষকে। নেতানেত্রীর দেশে আগমনজনিত সংবর্ধনার কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। তীব্র যানজটের মধ্যে পড়ে রোগী, বৃদ্ধ, শিশুসহ প্রত্যেক মানুষকে অসহায় হয়ে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। সাধারণ মানুষকে এ রাজনৈতিক সংবর্ধনা সংস্কৃতির কারণে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হলেও আমাদের জনদরদি নেতাদের সেদিকে মোটেও খেয়াল থাকে না। দেশের সাধারণ মানুষের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এ সব নেতা জনগণের ভাগ্যবিধাতা বনে যান। ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে তাদের আর সাধারণ জনগণের দুঃখ-দুর্দশার এ সব ছোটখাটো বিষয় চিন্তা করার সময় কোথায়!

‘ব্যক্তিস্বার্থে’ কিংবা ‘দলীয় শক্তি প্রদর্শনে’ কোনো সংস্কৃতি কোনো দেশে প্রতিষ্ঠা পেতে পারে না। ইতিহাসের রায় সবসময় জনগণের পক্ষেই থাকে। কেননা, সাধারণ জনগণই পারে সব ধরনের অশুভ, অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে। তবে রাজনীতিতে যারা সংশ্লিষ্ট তাদের এমন ‘সংস্কৃতি’ পালনের অভ্যাস খুব স্বাভাবিক ঘটনা। জনগণের কষ্ট, দুর্ভোগ তাদের বিবেককে নাড়া দিতে সমর্থ হয় না। সরকারি দল কিংবা বিরোধী দল যাই বলি না কেন, কার্যত ভোটের পরই তারা নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য জনবিচ্ছিন্ন থাকতেই ভালোবাসে। এসময় তারা নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত থাকেন। বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে রাজপথ চাঙ্গা রাখার চেষ্টা করলেও তা মূলত তাদের দলীয় কিংবা ব্যক্তিস্বার্থে হয়ে থাকে। জনস্বার্থে হরতাল-অবরোধ, আন্দোলনের ঘটনা আমাদের দেশে খুব কমই দেখা যায়। সাম্প্রতিক সময়ে জনগণের চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের ঘাটতি একটি বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে সরকারি দলের বিভিন্ন কর্তাব্যক্তি দলীয়সভা, জনসভা বা বিভিন্ন মিডিয়ায় উল্লেখ করলেও আশার বাণী শোনা ছাড়া কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বিগত জোট সরকারের সময় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিকে তারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কারসাজি বলে চালাতে চেষ্টা করতেন। তখন বিরোধীদল থেকে বলা হতো, কোনো এক অদৃশ্য সিন্ডিকেট বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। কিন্তু বর্তমান সময়ে দ্রব্যমূল্যের দাম অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে আকাশচুম্বী এখন এটিকে সরকারি দল কী বলবেন-অদৃশ্য হাতের কারসাজি? দ্রব্যমূল্যের এ পাগলাঘোড়াকে ‘সিন্ডিকেট সংস্কৃতি’ বলা যায়; এটি আমাদের দেশে প্রবহমান সংস্কৃতির মতোই উদার!

স্বাধীনতাপূর্ব এদেশে বাঙালির আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক অধিকার আদায়ে অসহযোগ আন্দোলন, হরতাল পালনের নজির রয়েছে। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশেও জোরেশোরে ‘হরতাল সংস্কৃতি’ পালন করা হয়। এসব কর্মসূচি যতটা না জনস্বার্থে তার বেশি পালিত হয় ব্যক্তি বা দলীয় স্বার্থ বিবেচনায়। সরকারে থাকা অবস্থায় হরতাল পালন না করার প্রতিজ্ঞা করলেও বিরোধী দলে গেলে হরতাল পালন রাজনৈতিক সংস্কৃতির একটি বিশেষ অংশ হিসেবে পরিচিত। হরতাল দেশ এবং মানুষের কল্যাণে কতটুকু ভূমিকা রাখে তা যেমন দেশবাসী জানে তেমনি জানেন বিজ্ঞ রাজনৈতিক নেতারা। তবুও কারণে-অকারণে, বিভিন্ন অজুহাতে হরতাল পালন আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো অত্যাবশ্যকীয় মনে করে থাকে। তবে আশার কথা যে, আমরা দেখেছি হরতাল তার গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। কেননা, হরতালে এখন আর সাধারণ মানুষের কথা থাকে না, থাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। আমার মনে হয় সংবর্ধনা সংস্কৃতির কারণেও যদি সাধারণ মানুষের এই দুর্ভোগ অব্যাহত থাকে, তাহলে এটিও তার গ্রহণযোগ্যতা হারাবে।

প্রশ্ন উঠতে পারে, আমি কি সংবর্ধনা সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী নই? উত্তর হবে- অবশ্যই বিশ্বাসী। কেননা, রাষ্ট্রের কৃতিকে সংবর্ধনা না দেওয়া হলে তাতে জাতি হিসেবে নিজেদের দেউলিয়াত্বই প্রকাশিত হয়। তবে এ সব সংবর্ধনা অনুষ্ঠান যাতে জনদুর্ভোগের কারণ না হয়, তা প্রথমেই বিবেচনায় নেওয়া সমীচীন। প্রতিনিয়ত রাজধানীতে কর্মমুখী মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। ফলে দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখতে জনদুর্ভোগমূলক সংবর্ধনা সংস্কৃতির বিকল্প ভাবার সময় এসেছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে এই গণসংবর্ধনা সংস্কৃতির নেতিবাচক দিকটি বিবেচনায় নেওয়ার অনুরোধ জানাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেভাবে অত্যন্ত  আন্তরিকতা, দক্ষতা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে রাজধানীর যানজট নিরসনে ফ্লাইওভার নির্মাণ, মেট্রোরেল প্রকল্পসহ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে দেশকে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তেমনিভাবে গণসংবর্ধনাজনিত  জনদুর্ভোগ নিরসনেও তিনি সদয় দৃষ্টি দেবেন বলে আমার দৃঢ়  বিশ্বাস রয়েছে।

সারা দেশেই বিষয়টি যথেষ্ট সমালোচিত হয়েছে। অনেক জনপ্রতিনিধিকেই বিব্রত হতে হয়েছে। তার পরও থেমে নেই সংবর্ধনা। চলছে তোরণ নির্মাণের প্রতিযোগিতা। মোটরসাইকেল বহরের ছুটে চলা থেমে নেই। সংবর্ধনা কমিটি, ডজনখানেক উপকমিটির তৎপরতাও চোখে পড়ার মতো। চারদিকে রঙিন ব্যানার-ফেস্টুনের ছড়াছড়ি। আনুগত্য প্রকাশের মোক্ষম সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ সবাই। তবে বিষয়টি একেবারে নতুন নয়। এ সরকারের আমলেই যে সংবর্ধনা-সংস্কৃতি চালু হয়েছে, এমনটি মনে করার কোনো কারণ নেই। জনপ্রতিনিধিদের সংবর্ধনা অনেক আগে থেকেই চলে আসা একটি রীতি। কিন্তু তা শুধু সংবর্ধনায় থেমে থাকলে হয়তো এত কিছু বলার ছিল না। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথির হাতে যে উপহার তুলে দেওয়া হয় তা নিয়েও আলোচনা হয়। এ নিয়ে অনেককে পরবর্তী সময়ে বিব্রত হতে হয়েছে। সংবর্ধনার নামে স্কুলের শিক্ষার্থীদের রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখার ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হয়েছে। কিন্তু সংবর্ধনা-সংস্কৃতি থেকে মুক্ত হওয়া যাচ্ছে না। সরকারের নিষেধাজ্ঞায় হয়তো স্কুলের শিক্ষার্থীদের রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছে না। তাতে সংবর্ধনা থেমে থাকছে না। আয়োজনের ঘাটতিও খুব একটা কম চোখে পড়ছে না।

এ ধরনের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান এখন আইন করে বন্ধ করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। জনপ্রতিনিধিরা তখনই সংবর্ধিত হয়েছেন, যখন জনগণ তাঁদের নির্বাচিত করেছে। এখন সেই সংবর্ধনার জবাব দেওয়ার সময়। নিজেদের কাজের ভেতর দিয়ে জনগণের ভালোবাসার মূল্যায়ন করতে হবে। এর বদলে ফুলের মালা গলায় দিয়ে সংবর্ধনা মূল্যহীন। সমালোচিত এই সংবর্ধনার ব্যাপারে জনপ্রতিনিধিদের বোধোদয়ের অপেক্ষায় আমরা। আর যতদিন স্তাবক ও মূর্খের হাতে রাজনীতি ততদিন নিস্তার নেই। দুভার্গ্য এই যে, এই দেশ এই মাটির বিজয়ী সন্তান তাজউদ্দীন বা সৈয়দ নজরুল কিংবা মুক্তিযোদ্ধাদের কেউ স্বাধীন দেশে গণসংবর্ধনা দেয়নি। তাদের সংবর্ধনা দিয়েছিল মা মাটি আর পতাকা। সে দেশে আজ রাজনীতির নামে নীতিহীনতা আর জনদুর্ভোগ বুঝতে না-পারা নেতানেত্রীরা ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় স্তাবকতায় বন্দি। আমরা কি এ থেকে কোনো দিন মুক্তি পাব না?

(লেখক – তরুণ কবি ও গবেষক)

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn