দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার নোয়াখালী-জামলাবাজ সেতু প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে। এ সেতুটি নির্মাণ হলে, পাথারিয়া ইউনিয়ন, শিমুলবাক ইউনিয়ন ও জয়কলস ইউনিয়নের ৫০ হাজার মানুষ উপজেলা সদরের সাথে সহজে ও সল্প সময়ে যাতায়াত করতে পারবেন। অন্যদিকে উপজেলাবাসী ওই ইউনিয়ন গুলোতেও সহজে যাতায়ত করতে পারনে। ব্রিজটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে ব্রিজ এলাকার নোয়াখালী, জামলাবাজ, মির্জাপুর, মানিকপুর, ফতেপুর, উজানীগাঁও গ্রামের মানুষের র্দীঘদিনে দুর্ভোগ একবারেই চলে যাবে। পরিবর্তন হবে এ এলাকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবন মান। এ ব্রিজটি ছিল ঐ এলাকার মানুষের স্বপ্নের ব্রিজ। এ ব্রিজ নিয়ে অনেক নাটক করেছেন অতিথের নেতারা কিন্তু বাস্তবে রূপদিতে পানেরনি। কিন্তু এলাকার কৃতি সন্তান অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান এমপির প্রচেষ্টায় ঐ এলাকার মানুষের স্বপ্নের ব্রিজটি নির্মাণ হচ্ছে। উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল (এলজিইডি) অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের নোয়াখালী-জামলাবাজ ব্রিজ কালনী নদীর উপর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সিআইবিআরআর প্রকল্পের আওতায় ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ১৩ কোটি ৯৪ লক্ষ ৮৮ হাজার ২৮৩ টাকা ব্যয়ে ১৬০ মি. লম্বা ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটির কাজ ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে দরপত্র আহ্বান করা হয় এবং দরপত্রের মাধ্যমে কাজ পান, ঢাকার কলাবাগানের নবারণ ট্রেডার্স লি.। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে কাজ শুরু করার প্রক্রিয়া চালিয়েছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের সব চাইতে বড় বাজার হচ্ছে নোয়াখালী বাজার এ বাজারে উপজেলার জামলাবাজ, মির্জাপুর, হাসনাবাজ, ফতেপুর মানিকপুর সহ শিমুলবাক ইউনিয়নের অধীকাংশ মানুষরা এ বাজারে আসেন বাজার করতে। কিন্তু জামলাবাজ, মির্জাপুর, হাসনাবাজ, ফতেপুর মানিকপুর জনগণ কালনী নদী পার হচ্ছেন ঘাটে থাকা খেয়া নৌকা দিয়ে ও হেমন্তে নদীর পানি কমে গেলে বাঁশের সাঁকো দিয়ে অনেক কষ্টে নদীটি পার হয়ে বাজারে আসেন তারা। পাশা-পাশি শিমুলবাক ও পাথারিয়া ইউনিয়নের জনগণ উপজেলা সদরে আসতে তারা দিরাই-মদনপুর রাস্তা হয়ে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা হয়ে শান্তিগঞ্জে আসেন অনেক সময় ও টাকা ব্যয় করে। এ ব্রিজটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে ঐ এলাকার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ অতি সহজেই অল্প সময় ও অল্প টাকা ব্যয় করে জামলাবাজ-উজানীগাঁও রাস্তা দিয়ে চলে আসতে পারবেন। ব্রিজ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কালনী নদীর এক পারে নোয়াখালী বাজার ও আরেক পারে জামলাবাজ গ্রাম। বিশাল এ নদীটি পারা-পারে ব্যবহৃত হচ্ছে খেয়া নৌকা। এ খেয়াঘাটের পাশে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন ব্রিজ নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে এসেছেন। তারা প্রাথমিক কাজ শুরু করে দিয়েছেন। কয়েকদিনের মধ্যেই এ প্রকল্পের বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু হবে।

উপজেলার জামলাবাজ গ্রামের বাসীন্দা আব্দুল বাছিত সুজন, এ ব্রিজটি ছিল আমাদের স্বপ্নের ব্রিজ, আমাদের এলাকার কৃতি সন্তান অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান এমপির একান্ত প্রচেষ্ঠায় আমদের স্বপ্ন আজ পুরণ হচ্ছে। এ জন্য মন্ত্রীকে এ এলাকার পিছিয়ে পড়া মানুষের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমরা চাই সঠিক সময়ের মধ্যে এ ব্রিজটি নির্মাণ কাজ শেষ হউক। কাজটি শেষ হলে আমাদের জনদুভোর্গ একবারেই কমে যাবে। আমরা উপজেলা সদরে ও আমদের বড় বাজার নোয়াখালী বাজারে গাড়ি নিয়ে যেতে পারবো। জামলাবাজ গ্রামের বাসীন্দা শাহিনুর আলম শাহিন জানান, আমাদের এ ব্রিজটি না হওয়ার কারণে অনেক দুর্ভোগে চলাচল করতে হয়েছিল, আমার ভাটি এলাকার মানুষরা দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা সদরে যেতে হলে দিরাই-সুনামগঞ্জ সদর হয়ে যেতে হতো। ব্রিজটি নির্মাণ করা হলে আমরা অল্প সময়ে আমাদের উপজেলা হয়েই এ রাস্তা (নোয়াখালী-জামলাবাজ-উজানীগাও) দিয়ে অনেক সহজেই যাতায়াত করতে পারবো। আমদের দীর্ঘদিনে জনদুর্ভোগ আর থাকবে না। স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য নুর আহমদ জানান, এ ব্রিজটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে, আমাদের এলাকার শিক্ষা ব্যবস্থা ও যোগাযোগ ক্ষেত্রের অনেক উন্নয়ন হবে। আমাদের দীর্ঘদিনে দুর্ভোগ শেষ হবে। স্থানীয় জনগণ এ এলাকার কৃতি সন্তান এম এ মান্নান এমপির প্রতি কৃতজ্ঞ। এ ব্যাপারে জয়কলস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাসুদ মিয়া জানান, আমার ইউনিয়নের নোয়াখালী-জামলাবাজ ব্রিজটি নির্মাণ হলে, শিমুলবাক, পাথারিয়া ইউনিয়ন ও আমার ইউনিয়নের নোয়াখালী, জামলাবাজ, মির্জাপুর, মানিকপুর, হাসনাবাজ, ফতেপুরের মানুষ অতি সহজেই উপজেলা সদরে আসতে পারবেন। যে খানে ঐ এলাকার মানুষ উপজেলা সদরে আসতে দেড় ঘন্টা সময় লাগতো ও অনেক টাকা ব্যয় হতো। এখন মাত্র ১০-১৫ মিনিটে চলে আসতে পারবেন ও তাদের টাকা সাশ্রয় হবে। মানুষের জীবন মানের অনেক পরিবর্তন হবে। এলাকার শিক্ষার হারও বৃদ্ধি পাবে বলে আমি মনে করি। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী রুবাইয়াত জামান এ প্রতিবেদককে জানান, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই ব্রিজটির কাজ শুরু হবে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন এরমধ্যে কর্মস্থলে এসে প্রাথমিক কাজে যোগ দিয়েছেন। বালি-পাথর ও নির্মাণ সামগ্রী কর্ম এলাকায় নিয়ে আসা হয়েছে। আমি সার্বক্ষণিক প্রকল্পের খোঁজ-খবর নিচ্ছি যেন কাজটি মান সম্মত ও টেকসই হয়। তিনি বলেন, আমাদের আরও অনেক প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ প্রকল্প গুলো বাস্তবায়ন হলে এ এলাকার চিত্র বদলে যাবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn