ছাতকের সিংচাপইড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন মো. সাহেল (৪০)’এর বিরুদ্ধে ছাতক থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। ছাতক উপজেলা পরিষদের গোল চত্বরে ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের উপর হামলা ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় রবিবার রাতে ছাতক থানায় মামলা (মামলা নম্বর- ১৫, তারিখ-১৩.০৮.২০১৭ ইং) দায়ের করা হয়। পুলিশ ১ আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে।  ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাহেলসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলাটি দায়ের করেন ছাতকের উত্তর খুরমা ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদ।
মামলার অন্যান্য
আসামিরা হলেন- একই ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের আবুল হাসনাত (২৮), গহরপুর গ্রামের বাবুল মিয়া (৩০), কালিপুর গ্রামের আব্দুল কাইয়ুম (৩০), গহরপুর গ্রামের জসিম উদ্দিন (৩২), কালিপুর গ্রামের আবুল খয়ের (৪০) ও সাতগাও গ্রামের শাহিন মিয়া (৩৫)। আবুল খয়েরকে গ্রেপ্তার করেছে ছাতক থানা পুলিশ। মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১০ আগষ্ট ছাতক উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভা ছিল। সভা  শেষে ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদ উপজেলা পরিষদ চত্বরে পৌঁছলে পূর্ব বিরোধের জের ধরে সিংচাপইড় ইউপি চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন সাহেলের নেতৃত্বে ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমেদকে এলোপাতাড়ি মারধর করে জখম করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে সাড়ে ৫৫ হাজার টাকা ও মামলার সাক্ষী হাবিবুর রহমানের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়।  ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদ স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের চাচাতো ভাই ও উপজেলা যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক। অন্যদিকে ইউপি চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন মো. সাহেল ছাতক পৌর মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালামের সমর্থিত হিসাবে পরিচিত।
ছাতক থানার ওসি আতিকুর রহমান দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন,‘মাসিক সমন্বয় সভার পর দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারি হয়েছে। টাকা পয়সা ছিনতাই হয়েছে কিনা তার তদন্ত চলছে। মামলার একজন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’ অভিযোগ রয়েছে, ছাতক আওয়ামী লীগে এমপি মুহিবুর রহমান মানিক ও ছাতক পৌরসভার মেয়র আবুল কালামের মধ্যে দ্বন্দ্ব বহুদিনের। এই দ্বন্দ্বে আত্মীয়-স্বজন এমনকি সমর্থকরা প্রায়ই জড়িয়ে পড়েন। ইউপি চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন মো. সাহেল ছাতক পৌর মেয়র আবুল কালামের সমর্থক।
গত ১৭ জুলাই সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইনসে জেলার সকল ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথে পুলিশ সুপারের মতবিনিময় সভায় কথা কাটাকাটির জের ধরে সাহাব উদ্দিন সাহেল বিল্লাল আহমদের উপর চড়াও হন। সভায় উপস্থিত ইউপি চেয়ারম্যানগণ বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করেন। পুলিশ সুপারের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপে সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইনসের ঘটনা বেশী দূর গড়ায়নি।  এমপি মুহিবুর রহমানের ব্যক্তিগত সহকারি মোশাহিদ আলী বলেন,‘গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিন এমপি মহোদয় (মুহিবুর রহমান মানিককে) মঞ্চে উঠার কিছুক্ষণ আগে মাঠেই চোখে মুখে ধুলা-বালি ছিটিয়ে দিয়েছিল সাহেল। এমপির সাহেবের উপর সশস্ত্র হামলার পরিকল্পিত হামলার ছক কষে চোখে মুখে ধুলো ছিটিয়ে দেয়া হয়েছিল। তবে উপস্থিত নেতাকর্মীদের প্রতিরোধের মুখে পিছু হঠে সাহেলসহ সন্ত্রাসীরা। সর্বশেষ গত জুলাই মাসে পুলিশ লাইনসে এমপি মহোদয়ের চাচাতো ভাইয়ের উপর হামলা করেছিল। আমরা এসব সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানাই।’
এসব অভিযোগের বিষয়ে সিংচাপইড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন সাহেলের সাথে কথা বলতে বুধবার বিকাল ৬ টায় তাঁর ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করলে প্রথমে ফোন রিসিভ করেননি তিনি। কিছুক্ষণ পর ফোন বন্ধ করে দেন সাহেল। সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাহেলের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। একারণে এসব বিষয়ে তাই তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn