জগন্নাথপুরে চালের ন্যায্যমূলের দোকান কম-থাকায় ভোররাত সারাদিন অপেক্ষা করেও চাল পাচ্ছেনা না দরিদ্র লোকজন। বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও চাল না-পেয়ে ইউএনও’র কার্যালয়ে অবস্থান নেয় কিছু নারী। সেখানে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করে অবশেষে শূন্যহাতে বাড়ি ফিরে তারা। এমন দৃশ্য দেখা গেলো বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ ভবনের দ্বিতীয় তলায় ইউএনও’র কার্যালয়ের সামনে।

জগন্নাথপুরের ইউএনও’র কার্যালয়ে অবস্থান নেয়া পৌর এলাকার হবিবনগর গ্রামের এক নারী ছমিরুন নেছা এ প্রতিবেদক বলেন- গত ৫-৬ দিন ধরে ন্যায্য মূল্যে চাল নেয়ার জন্য ভোররাত থেকে দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করেও চাল পাইনি। প্রতিদিনই আসছে কিন্তু আর খালি হাতে ফিরে যেতে হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন- চাল কেন্দ্রের পরিচালকরা তাদের পরিচিত লোকজন দেখে দেখে আগেই চাল দিয়ে দেন। আরেক নারী জানান- “খুবই অভাবের মধ্যে সংসার চলছে তার। সংসারের অন্য সব কাজকর্ম ফেলে সকাল ৬টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকি চাল পাওয়ার আশায়। গত ৮ দিনেও মেলেনি চাল। আমরা কী চাল কোন দিনই পাব না?”

পৌরশহরে বিভিন্ন চাল কেন্দ্রে ঘুরে দেখা যায়- সরকারিভাবে নির্ধারিত প্রতিটি চাল কেন্দ্রে দরিদ্র মানুষের উপচেপড়া ভিড়। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেও শত শত মানুষ খালি হাতে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। আবার সূর্যোদয়ের আগেই চাল কেন্দ্রে পৌঁছে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে চাল নিতে হয়। চাল কেন্দ্রের ডিলাররা জানান- “জনপ্রতি ৫ কেজি করে দুইশত ব্যক্তি মধ্যে চাল ও আটা সরবরাহ করা হচ্ছে। চাল কেন্দ্রে প্রতিদিন সহস্রাধিক মানুষের ঢল নামে। চাহিনার তুলনায় চাল কেন্দ্রের সংখ্যা কম থাকায় প্রচ- ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে।”

জানা যায়- অকাল বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে জগন্নাথপুরের সবক’টি হাওরের ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও অভাবী মানুষের জন্য সরকার গত ১৩ এপ্রিল থেকে খোলা বাজারে ন্যায্য মূল্যে ১৫ টাকা দরে চাল ও ১৭ টাকা দরে আটা বিক্রি করা হচ্ছে। জগন্নাথপুর উপজেলায় তিনটি চাল কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন ৩ টন চাল ও ৩ টন আটা খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে। জগন্নাথপুরের ইউএনও মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ জানান- চাল কেন্দ্র বাড়ানোর আমরা লিখিতভাবে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে জানিয়েছি।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn