পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, গত মাসেই বলেছিলাম আগস্ট মাসে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। আগস্টের ধারাবাহিকতায় সেপ্টেম্বরেও মূল্যস্ফীতি কিছুটা বাড়বে। তবে সবমিলিয়ে অক্টোবর থেকে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে উন্নয়ন সাংবাদিকদের সংগঠন ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের (ডিজেএফবি) উন্নয়ন সংলাপে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। ডিজেএফবির সভাপতি হামিদ-উজ-জামান মামুনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাহানোয়ার সাইদ শাহীনের সঞ্চালনায় সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

এম এ মান্নান বলেন, গেলো ১০ বছরে দেশে উন্নয়ন বেশি হওয়ায় খরচও হয়েছে বেশি, অনেক কিছু আমলে নেয়া হয়নি। করোনাভাইরাস ও বহির্বিশ্বে মোড়লদের কোন্দলের কারণে দেশের অর্থনীতি কিছুটা বিপাকে থাকলেও আগামী অক্টোবরের মধ্যে স্থিতিশীলতা আসার সম্ভাবনা রয়েছে। জ্বালানি তেলের মূল্য আগস্টে বাড়ানো হয়েছে, তাতে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, বর্তমান অবস্থায় সকলের কৃচ্ছ্রসাধন হওয়া দরকার। অর্থনীতির কাজই হচ্ছে মাপ-জোঁক করে করতে হবে। বিগত ১০ বছরে নতুন প্রাপ্তি ছিল বেশি। আমাদেরকে বৈশ্বিক কারণেই এই সংকট হয়েছে। খাদের শেষপ্রান্তে যেয়ে সরকারপ্রধান লাগাম ধরেছেন।

এতে করে আমরা অনেক কিছু থেকে বেঁচে গেছি। আগস্টে মূল্যস্ফীতি বাড়বে ও সেপ্টেম্বরেও থাকবে। মূল্যস্ফীতি সেপ্টেম্বরে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলে জিডিপি সাড়ে ৭ নতুবা সাড়ে ৬ শতাংশ হয়ে দাড়াবে। এই মাসে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলে অক্টোবরে অনেক কমে আসবে মূল্যস্ফীতি। আশা করি মূল্যস্ফীতি কমবে। আইএমএফের ঋণ সম্পর্কে তিনি বলেন, আইএমএফের দায়-দায়িত্ব আমাদের জন্যও রয়েছে। কোন সদস্য বিপদে পড়লে তারা ঋণ, উপদেশ, সহযোগিতা দিবে। কোন রাষ্ট্র খাদে পড়ে গেলে সেখান থেকে তুলে আনার দায়িত্ব আইএমএফের। এখন আমাদের প্রয়োজন বেশি। সেক্ষেত্রে ঋণ চাইতে হবে। আমাদের সঙ্গে বন্ধুর মত আচরণ করতে হবে, মহাজনের মত নয়। আইএমএফের ঋণ পেয়ে যাবো। সামাজিক স্থিতিশীল নিশ্চিত করা না গেলে কেউ কাজ করতে পারবে না।

দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হলে আইনের প্রয়োগে কঠোর হতে হবে উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই হয়। তবে আমাদের এখানে বেশি দৃশ্যমান। আমরা চেষ্টা করি দুর্নীতি কমিয়ে রাখতে। দারিদ্রতাও দুর্নীতির অন্যতম কারণ। অনেক কাজে প্রকল্প পরিচালকের এখানে-সেখানে হয়তো কিছু এদিক-সেদিক হয়ে যায়। আমরা এখন যে বড় প্রকল্প নিয়েছি তা আমাদের পূর্বপুরুষরাও করেনি বা চিন্তাও করেনি। তিনি বলেন, আমরা চায় প্রকল্প পরিচালকরা থেকে বসে কাজ করুক। একজনকে একাধিক প্রকল্পের দায়িত্ব না দেয়া হোক। তবে আমাদের এই চাওয়া পূরণ হয়নি।

প্রকল্পে কৃচ্ছ্রতা সাধন নিয়ে বলেন, আমাদের অনেক প্রকল্পের রিভিউ করতে হতে পারে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ব্যয় সমন্বয় করতে হবে। অর্থাৎ একটি কাজের টাকা দিয়ে আরেকটি কাজ করতে হবে। গ্রাম হবে শহর নিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গীয় সাংস্কৃতিতে গ্রাম ছিল প্রধান অথচ এটিকে সবসময় অবহেলা ও বাদ রাখা হয়েছিল। একমাত্র শেখ হাসিনাই গ্রামের উন্নয়নে নতুন প্রকল্প নিয়েছেন। ৫০ বছর পর সব বাঙালি এক পরিবার হয়ে যাবে। সভাপতির বক্তব্যে হামিদ-উজ-জামান মামুন বলেন, এটি ‘ডিজেএফবি উন্নয়ন সংলাপ’র প্রথম আলোচনা অনুষ্ঠান। আজকের আলোচনায় অনেক ক্ষুধা নিবারণ হয়েছে। আগামীতে আরো সুন্দর করে আয়োজন করা হবে। দেশের বিভিন্ন বিশিষ্টব্যক্তিদের নিয়ে এই সংলাপ চলমান থাকবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn