খুজিস্তা নূর-ই-নাহারিন (মুন্নি) (ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে নেয়া)

কথায় বলে, ”ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে”। ঠিক ঢেঁকির মতোই কোন কোন নারী গণ্ডীর বাইরে বেরোতে পারে না কিছুতেই। দুই একটা কলাম বা ফেসবুক স্ট্যাটাস লেখার পর নিজেই নিজেকে আধুনিক প্রগতিশীল দাবী করে কল্পনার ফানুস উড়ায়। কল্পনার জগত আর বাস্তবতার মধ্যে বিস্তর ব্যবধান তাঁদের কেবল মনঃকষ্টই বাড়ায়। নিজের জায়গাটা নিয়ে অহর্নিশ এক ধরনের হীনমন্যতা তাড়া করে ফিরে, মনের গহীনে এক ধরনের ঈর্ষাকাতরতা কাজ করে। বস্তিবাসী দিনমান খেঁটে খাওয়া স্বপ্নহীন স্বল্প আয়ের নারীদের মতোই এই সব তথাকথিত প্রগতিশীল, জ্ঞানী-গুণী দাবী করা আধুনিক নারীরাও সার্বক্ষণিক একজন অপরজনের পেছনে লেগে থাকে এবং একের আড়ালে অপরের কুৎসা রটনায় ব্রতী হয়, সুযোগ পেলে কোমর বেঁধে ঝগড়া করতে বিন্দু মাত্রও কার্পণ্য করে না । সারাদিন পারিবারিক কলহ-অশান্তি, সামাজিক জীবনে কে কার থেকে কতো বেশী অসুখী, কে কার থেকে কতো বেশী রূপবতী, স্টাইলিশ সেই প্রতিযোগিতায় ব্যাপৃত থাকে। রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক এমন কি পরিবারের প্রতিও কোন দায়বদ্ধতা নেই, নিজেকে নিয়ে বৃথাই এতো দেখানো ব্যস্ততা । প্রতিশ্রুতিহীন স্বার্থান্ধ মানুষ যা খুশী তাই বলতে পারে লিখতে পারে।

এই প্রতিহিংসাপরায়ণ নারীরা জনসম্মুখে নোংরা কথা বলা ব্যতিরেকে নিজের বা অন্য কারো কোন উপকারও করতে পারে না, ভালো কোন কাজেও তাঁদের সচরাচর চোখে পরে না। সারাক্ষণ ফেসবুকে অলস পরে থেকে নিজেকে কেবল জাহির করা, কারণ কাজের অভাব, ”তাই নাই কাজ তো খৈ ভাজ” । ভার্চুয়াল মাধ্যমই তাঁদের একমাত্র সামাজিক পরিচিতি, তাঁদের অহংকারের জায়গা । তাই এই জগতে অন্যের প্রশংসায় তাঁরা ব্যথিত হবে স্বাভাবিক । সমাজের সুপরিচিত গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন অন্য কোন নারীকে হেয় প্রতিপন্ন করাতেই এই সকল নারীদের নিজের সুখ, আনন্দ আর প্রাপ্তি যা এক ধরনের আত্মপ্রতারণা, আত্মপ্রবঞ্চনা আর দুরারোগ্য মানসিক ব্যাধির মতোই ভায়াবহ । এরা কেবল করুণা আর অনুকম্পা পাওয়ারই যোগ্যতা রাখে। এরা মুখে যতই কথার তুবড়ি ছোটাক নারী থেকে বেড়িয়ে মানুষ হতে পারে না কখনও ।

লেখক: সম্পাদক, পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজ

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn