শিক্ষার্থীদের চুরি যাওয়া মোবাইল ফোন  চোর গ্রেফতার

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে টাঙ্গুয়ার হাওরে ভ্রমনে আসা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চুরি হওয়া মোবাইল ফোন সেট সহ এক চোরকে সোমবার সন্ধায় থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে।’ গ্রেফতারকৃতর নাম, ছয়ফুল ইসলাম (৩০)। সে উপজেলার শ্রীপুর উওর ইউনিয়নের তরং শ্রীপুরের তরং গ্রামের হেলিম মিয়ার ছেলে।’ জানা গেছে, তাহিরপুরের টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ গোপন সংবাদের ভিওিত্বে বালিয়াঘাট বাজার থেকে ১১ হাজার টাকা মুল্যের একটি চোরাই মোবাইল ফোন সেট সহ সোমবার সন্ধায় ছয়ফুলকে গ্রেফতার করেন।’ তাহিরপুর থানার ওসি (তদন্ত) মো. আসাদুজ্জামান হাওলাদার  জানান, বেশ কয়েকদিন পুর্বে ঈদুল ফিতরের ছুঁটিতে টাঙ্গুয়ার হাওরে ভ্রমণে আসা ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়, বুয়েট সহ রাজধানীর অন্য কয়েকটি বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা টেকেরঘাটে ট্রলার নোঙ্গর করে রাত্রী যাপনকালে ছয়ফুল ও তার সহযোগীরা শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট সহ ২টি আইফোন, অন্য ৩টি মোবাইল ফোন, জামা জুতোজোড়া, নগদ টাকা সহ প্রায় দু’লাখ টাকার অধিক মুল্যের মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়।’ ওই শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে চুরি হওয়া একটি ফোনের লক খুলতে বালিয়াঘাট বাজারে মোবাইল সার্ভিসের দোকানে আসলে ছয়ফুল পুলিশের ফাঁদে আটকা পড়ে।’ এ ব্যাপারে তাহিরপুর থানার টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিমল সরকার বাদী হয়ে সোমবার রাতে ছয়ছুল ও তার অপর তিন সহযোগীর বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

আবারো কালি মন্দিরের মূর্তি ভাংচুর,গ্রেফতার ১,মামলা দায়ের

তাহিরপুরে প্রধানমন্ত্রীর পোষ্টার আগুনে পুরানো ও পরপর ২টি কালি মন্দিরের মূর্তি ভাংচুরের ঘটনায় দায়েরকৃত পৃথক ২টি মামলার আসামীরা জামিনে বেড়িয়ে আসার এক মাস যেতে না যেতেই আবারো ১টি কালি মন্দিরের মূর্তি ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এঘটনার প্রেক্ষিতে গতকাল রোববার রাত ১২টায় অভিযান চালিয়ে বাবুল মিয়া (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে সন্দেহ জনক ভাবে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃত ব্যক্তি উপজেলার চিকসা গ্রামের মৃত নুরুল মিয়ার ছেলে। কিন্তু আসল সন্ত্রাসীরা রয়েছে ধরাচোয়ার বাহিরে। এলাকাবাসী ও মামলা সূত্রে জানাযায়,গত শনিবার ভোরে সন্ত্রাসীরা উপজেলার তাহিরপুর সদর ইউনিয়নের চিকসা গ্রামের শ্রীশ্রী কালি মন্দিরের তালা ভেঙ্গে ৩টি মূর্তি ভাংচুর করেছে সন্ত্রাসীরা। এর আগে গত ৩০.০১.১৭ইং সোমবার রাত ১১টায় বাদাঘাট বাজারে প্রধানমন্ত্রীর পোষ্টার আগুনে পুরায় কামড়াবন্দ গ্রামের মৃত বদ মিয়ার ছেলে হাবিব সারোয়ার আজাদ,তার সহযোগী একই গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে আলম শেখ (২০) ও বাদাঘাট গ্রামের শহিদুল্লার ছেলে রাজু মিয়া(২১)। এঘটনার প্রেক্ষিতে সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ঝুমুর তালুকদার বাদী হয়ে উপরের উল্লেখিত ৩জন সন্ত্রাসীকে আসামী করে গত ০১.০২.১৭ইং বুধবার রাত ৮টায় মামলা নং-৫ দায়ের করেন। মামলা দায়েরের ঘটনায় আসামীরা ক্ষিপ্ত হয়ে পরদিন ০২.০২.১৭ইং শুক্রবার রাত ২টায় বাদাঘাট বাজারের পার্শ্ববর্তী পৈলনপুর গ্রামের কালি মন্দিরের ২টি মূর্তি ভাংচুর করে। এঘটনায় ঝুমুর তালুকদার বাদী হয়ে থানায় আরো ১টি মামলা করেন। পৃথক ২টি মামলা দায়েরের পর পুলিশ রাজু মিয়াকে গ্রেফতার করলে সে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিলে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এঘটনায় আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে সন্ত্রাসী হাবিব সারোয়ার আজাদ ও আলম শেখ। তারা গত ১১.০৩.১৭ইং শনিবার রাত ১২টায় উপজেলার দক্ষিন বড়দল ইউনিয়নের টুকেরগাঁও গ্রামের সার্বজনিন কালি মন্দিরের ১০টি মূর্তি ভাংচুর করে। এঘটনার প্রেক্ষিতে মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক বাবুল বর্মণ বাদী হয়ে গত ১৩.০৩.১৭ইং সোমবার বিকেলে মামলা নং-৮ দায়ের করেন। প্রধানমন্ত্রীর পোষ্টার পুরানো ও মূর্তি ভাংচুরকারী আসামীদের বিরুদ্ধে পরপর ৩টি মামলা দায়ের করার পরও পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার না করায় ফুসে উঠে উপজেলার সর্বস্থরের জনসাধারণ। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এলাকার নেতাকর্মীরাসহ সাধারণ জনগন শুরু করে মানববন্ধন। এঘটনার পর পুলিশ প্রশাসন তৎপর হয়ে উঠলে সন্ত্রাসী হাবিব সারোয়ার আজাদ ও আলম শেখ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। এরপর হাবিব সারোয়ার আজাদ ও তার সহযোগী আলম শেখ দীর্ঘদিন পলাতক থেকে ও রাজু মিয়া জেল খেটে আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় ফিরে আসে। আর তারা ৩জন ফিরে আসতে না আসতেই আবারও কালি মন্দিরের মূর্তি ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। চিকসা গ্রামের কালি মূর্তি ভাংচুরের ঘটনায় গতকাল ০৩.০৭.১৭ইং সোমবার সকাল ১০টায় চিকসা শ্রীশ্রী কালি মন্দির কমিটির সভাপতি রনদা পুরকায়স্থ বাদী হয়ে মামলা নং-৩ দায়ের করেছেন। তাহিরপুর থানার ওসি তদন্ত আসাদুজ্জামান হাওলাদার মামলা দায়েরর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মুর্তি ভাংচুরের ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের চিকসা গ্রামে শ্রী শ্রী কালি মন্দিরের দরজা ভেঙ্গে মন্দিরে প্রবেশ করে মন্দিরের সকল মুর্তি ভাংচুর করার ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে তাহিরপুর উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খিস্ট্রান ঐক্য পরিষদ ও উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে উপজেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদিক্ষন শেষে তাহিরপুর সদর বাজারে প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি সুভাষ পুরকায়স্থ এর সভাপতিত্বে  বক্তব্য রাখেন তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল,উপজেলা আওয়ামীলীগ যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক শফিকুল ইসলাম,উপজেলা আওয়ামীলীগ তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক স্বপন কুমার দাস, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা সাধারন সম্পাদক হাফিজ উদ্দিন,উপজেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর খোকন, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খিস্ট্রান ঐক্য পরিষদ আহবায়ক অনুপম রায়, আওয়ামীলীগ নেতা রঞ্জু মুখার্জী,সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি শাহীনুর তালুকদার,উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি সুষেন বর্মন,রায়পাড়া কালি মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারন সম্পাদক মনধীর রায়,সাংবাদিক রাজন চন্দ,চিকাসা গ্রামের সমাজসেবক রাজিব পুরকায়স্থ প্রমুখ। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা,চিকসা কালি মন্দিরের মুর্তি ভাঙ্গার সাথে যাারা  জড়িত প্রশাসন তাদের খুব দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানান । অন্যথায়  পরবর্তীতে আরো বিভিন্ন কর্মসুচি গ্রহন করা হবে বলে বক্তারা জানান। উল্লেখ্য গত রবিবার চিকসা কালি মন্দিরের মুর্তি এক দল দুষ্কুতিকারিরা ভেঙ্গে ফেলে। এ ঘটনায় পুলিশ ঘটনার দিন রাতে জড়িত সন্দেহে ১ জনকে গ্রেফতার করে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn