ফারাজী আজমল হোসেন-  প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন এলেই দেশের একটি মহল মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। তবে দেশে অসাংবিধানিক শাসন বা জরুরি অবস্থা আসলে তাদের গুরুত্ব বাড়ে। এদের মাথায় একটাই জিনিস থাকে অস্বাভাবিক, অসাংবিধানিক, মার্শাল ল’ বা জরুরি অবস্থা কখন আসবে, তারা গুরুত্ব পাবে। এই শ্রেণির মানুষরা আঁকাবাঁকা বা অবৈধপথে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে। এই শ্রেণির মানুষরা দেশ ও দেশের মানুষের জন্য যন্ত্রণাদায়ক। তাদের নির্বাচনে আসার সাহস নেই, নির্বাচনে গেলে জনগণের ভোট পাবে না। গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির (এ) সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ওয়ান ইলেভেনের সময়ও তারা ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল। আর ২০১৩ সালেও বিএনপি নেত্রী (খালেদা জিয়া) নির্বাচন বানচাল করে আঁকা-বাঁকা পথে ক্ষমতায় যেতে চেয়েছিলেন। এ সময় সংসদে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

মৃত্যুতে আমি ভয় পাই না- প্রধানমন্ত্রী দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন, মৃত্যুতে আমি ভয় পাই না। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে আমি সাহস নিয়ে দেশের কল্যাণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এ জন্যই আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বুলেট-গুলি, গ্রেনেড হামলা, বড় বড় বোমা পুঁতে রাখা হয়। তবুও আমি মরি না। আল্লাহ আমাকে কীভাবে যেন বাঁচিয়ে রাখেন। হয়তো পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা দেশের মানুষের জন্য কোনো ভালো করাবেন। তিনি বলেন, কী পেলাম আর কী পেলাম না- সেই হিসাব আমি মেলাই না। বরং দেশের জন্য কী করতে পারলাম, দেশের মানুষকে কতটুকু শান্তি, স্বস্তি ও উন্নতি দিতে পারলাম, সেটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় কথা।
এমপিওভুক্তির সিদ্ধান্ত আগামী বাজেটেই-তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্কুল-কলেজ সরকারিকরণ বা এমপিওভুক্ত নীতিমালার ভিত্তিতেই হবে। কোন স্কুলে ছাত্র-ছাত্রী কত, শিক্ষার মান কেমন, শিক্ষকদেরও যোগ্যতা কেমন এবং স্কুলটি জাতীয়করণের যোগ্য কি না তা দেখতে হবে। তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ ও এমপিওভুক্ত করণের বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। আমরা নীতিমালার ভিত্তিতেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করে যাচ্ছি। বিষয়টি আমরা নিশ্চয়ই বিবেচনা করবো এবং পরবর্তী বাজেট যখন আসবে তখন সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।
বঙ্গবন্ধু সেতুতে পৃথক রেল সেতু নির্মাণ প্রকল্প-সরকারি দলের সদস্য মো. ইসরাফিল আলমের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের উত্তরাঞ্চলের সাথে অন্যান্য অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বঙ্গবন্ধু সেতুতে ডুয়েলগেজ রেললাইনসহ পৃথক রেল সেতু নির্মাণে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এতে সিলেট, ময়মনসিংহ, ঢাকা, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম এলাকার জনগণের উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে।
বাংলাদেশ পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী ঘোষণার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে-সরকারি দলের মোঃ আব্দুল মতিনের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ১৯৬৭ সালের পূর্বের সীমারেখা অনুযায়ী পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী ঘোষণার ব্যাপারে অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র জেরুজালেমকে কেবলমাত্র ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা করায় বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এ সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘের প্রস্তাবনা অনুযায়ী জেরুজালেমের আইনগত অবস্থান রক্ষায় সরকার সর্বদা গুরুত্বারোপ করে এসেছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn