আজ থেকে কোচিংসেন্টার বন্ধ-

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে। এবার থেকে সব শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা হবে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে। আর প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে আজ থেকে দেশের সব ধরনের কোচিংসেন্টার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ ব্যবস্থা চলবে পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত। এর পরও প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ পেলে ওই পরীক্ষা বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা উপলক্ষে গতকাল সচিবালয়ে এক সভায় সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। তবে কয়েক বছর ধরেই ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ মিললেও পরীক্ষা বাতিল করা হয়নি। এ প্রসঙ্গে সচিব সোহরাব হোসাইন বলেনÑ আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, যদি এ রকম ঘটনা (প্রশ্নফাঁস হয়) ঘটে, পরীক্ষার পরও যদি প্রমাণ পাওয়া যায় যে, পরীক্ষার আগে প্রশ্ন আউট হয়েছে সেক্ষেত্রে ওই পরীক্ষা বাতিল হবে। কোনো অবস্থাতেই ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা হবে না। এমনকি পরেও যদি প্রমাণ হয় যে, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছিল তা হলে সেই পরীক্ষাটি অবশ্যই বাতিল করব। কোনো অবস্থাতেই কোনো ধরনের আপস করতে রাজি নই।

অবশ্য প্রশ্নফাঁস হওয়ার মতো যত পথ আছে, তা বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে দাবি করে সোহরাব বলেনÑ আমাদের এ প্রজন্মকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়ার জন্য কোনো অবস্থাতেই কাউকে সে পথে এগোতে দেব না। এর পরও যদি কেউ এগোন এবং ধরা পড়েন, নিশ্চিত প্রমাণ পেলে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর কোনো অবস্থাতে যদি কেউ (পরীক্ষার্থী) ফাঁস হওয়া প্রশ্ন পেয়ে আনন্দিত হন, তা হলে তার জন্য সংবাদ হচ্ছেÑ সেই পরীক্ষাটি বাতিল হবে। অভিন্ন প্রশ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠানে কোনো ঝুঁকি থাকছে কিনাÑ এ প্রশ্নে সচিব বলেন, আমরা বিভিন্ন কারণে এ ঝুঁকিটা নিচ্ছি। অনেকেই আমাদের অভিযুক্ত করছেন যে, বিভিন্ন বোর্ডে বিভিন্ন মানের প্রশ্ন হচ্ছে, সারা দেশে একভাবে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে না। ওই সমস্যা সমাধানেই সারা দেশে এক প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ। এবার পুরোপুরিই ঝুঁকি নিচ্ছি। এ সময় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, কোচিংসেন্টারগুলো প্রশ্নফাঁস করার একটি ‘আখড়া’। তাই আমরা শুক্রবার থেকে কোচিংসেন্টার বন্ধ রাখব। পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত এগুলো বন্ধ থাকবে। দেশের সব ধরনের কোচিংসেন্টার বন্ধ করতে সভায় উপস্থিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিদেরও নির্দেশ দেন মন্ত্রী। নাহিদ বলেনÑ পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে শুধু কেন্দ্রে প্রবেশই নয়, অবশ্যই সিটে বসতে হবে। প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলা হবে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগেই। এর আগে কেউ প্রশ্নের প্যাকেট খুললে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব। কেন্দ্র সচিব একটি সাধারণ ফোন (স্মার্টফোন নয়) সঙ্গে রাখতে পারবেন। অন্য কেউ কোনো ধরনের মোবাইল ফোনই সঙ্গে রাখতে পারবেন না। আমরাও পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলে মোবাইল বাইরে রেখে যাব। ঠিক সময়ে কেন্দ্রে পৌঁছতে যানজট কিংবা পরীক্ষা কেন্দ্র দূরে হলে তা আগে থেকেই বিবেচনায় নিয়ে পরীক্ষার্থীদের বাসা থেকে রওনা হওয়ার পরামর্শ দেন শিক্ষামন্ত্রী। এদিকে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর ছাড়াও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn