জাতিসংঘের পদস্থ কর্মকর্তা বাংলাদেশি কূটনীতিক ড. হামিদুর রশীদকে গৃহকর্মী নির্যাতন মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন নিউইয়র্কের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের বিচারপতি অ্যান্ড্রু জে প্যাক। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের পর বিচারক মামলাটি খারিজ করে দেন। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি কার্যালয়ের মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা জেমস এম মারগলিন এ তথ্য জানিয়েছেন। হামিদুর রশীদ জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপির ডেভেলপমেন্ট স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পলিসি অ্যানালাইসিস ইউনিটের পরিচালক। গৃহকর্মীর অভিযোগের ভিত্তিতে বিদেশিকর্মী নিয়োগের চুক্তি, ভিসা ও পরিচয় জালিয়াতির অভিযোগে এ বছরের ২০ জুন হামিদুরকে তার ম্যানহাটনের বাসা থেকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন যুগান্তরকে বলেন, অভিযোগ প্রমাণের আগেই হামিদুরকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। গণমাধ্যমে তার গ্রেফতারের খবর প্রকাশিত হলে বাংলাদেশিরাও বিব্রতবোধ করেন। তবে হামিদুর কোনো অন্যায় করেননি, তা আদালতের রায়ে প্রমাণ হল। তিনি বলেন, নিউইয়র্কের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট একটি শক্তিশালী আদালত। সেই আদালত হামিদুরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। এটি বাংলাদেশি কূটনীতিকদের একটি বিজয়। হামিদুর রশীদের বিরুদ্ধে তার গৃহকর্মীর অভিযোগ ছিল, চুক্তি অনুযায়ী তাকে পারিশ্রমিক দেয়া হয়নি। সাপ্তাহিক ছুটি কিংবা ওভারটাইমের বেতন না দিয়ে উপরন্তু তাকে জিম্মি করে দিন-রাত কাজ করিয়ে নেয়া হয়।

উল্লেখ্য, শ্রমিক পাচার, গৃহপরিচারককে নির্যাতন ও বেতন না দেয়ার অভিযোগে ২০১৪ সালে নিউইয়র্কের তৎকালীন কনসাল জেনারেল মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ম্যানহাটনের ফেডারেল আদালতে মামলা করেছিলেন তার গৃহকর্মী মাসুদ পারভেজ রানা। মামলার খবর শুনে ওই দিনেই সপরিবারে নিউইয়র্ক ত্যাগ করেন মনিরুল ইসলাম। এ বছর ডেপুটি কনসাল জেনারেল শাহেদুল ইসলামের বাসা থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে একই ধরনের অভিযোগ আনেন তার গৃহপরিচারক। শাহেদুল যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ না করে আইনি প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হন। গত ১২ জুন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করলে তিনি জামিনে মুক্ত হন। মামলাটি এখন আদালতে বিচারাধীন। শাহেদুলের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেন, যতদূর জানি এ মামলাটি আদালতে প্রমাণ করা কঠিন। শাহেদুল ইসলামও সুবিচার পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। রাষ্ট্রদূত বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কিছু আইন রয়েছে, যা অনেককে অভিযোগে উৎসাহিত করে। গৃহকর্মীরা যদি ভিকটিম হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে পারেন, তা হলে এ দেশে থাকার গ্রিনকার্ড সহজেই পেয়ে যান। এ অভিপ্রায়ে অনেকে কূটনীতিকদের বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলেন, যা খুবই দুঃখজনক।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn