দোয়ারাবাজারে সুরমা নদী থেকে উদ্ধার হওয়া মরদেহটি শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী বৈশাখী ধর তৃপ্তির। বৃহস্পতিবার তৃপ্তির বাবা পরিতোষ ধর মেয়ের কাপড় দেখে পচে যাওয়া মরদেহ সনাক্ত করেন। এর আগে বুধবার নদী থেকে অর্ধগলিত মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। বৈশাখী ধর তৃপ্তি (২৭) সিলেটের খাদিমনগর উপজেলার বহর দাসপাড়া এলাকার বাসিন্দা পরিতোষ ধরের মেয়ে। তিনি সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ছাত্রী ছিলেন। বাংলাদেশ ডাক বিভাগের সিলেট শাখায় আরএমএস বিভাগে চাকুরী করতেন তৃপ্তি। গত বুধবার দোয়ারাবাজার থানার পুলিশ অজ্ঞাত নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ মর্গে পাঠায় । এদিকে, বুধবার রাতে তৃপ্তির বাবা বাদী হয়ে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে মেয়ের স্বামী রিংকু ধরকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় বুধবার রাতেই দক্ষিণ সুরমার ভার্থখলার বাসা থেকে রিংকুকে আটক করে পুলিশ। তৃপ্তির পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের জুন মাসে তৃপ্তি ও রিংকুর বিয়ে হয়। স্বামী রিংকু ধর একটি এনজিওতে চাকুরী করেন। তৃপ্তির পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর রিংকু পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। অনেক সময় তিনি তৃপ্তিকে নির্যাতন করতেন। গত ২২ এপ্রিল ভোরে তৃপ্তি স্বামীর বাসা হতে বের হয়ে আর বাসায় ফিরেননি। ওই দিন বাসা হতে বের হয়ে তৃপ্তি তার বাবার মোবাইল ফোনে খুদেবার্তায় লেখেন ‘মাই লাইফ ইজ ফেইলর’। এরপর থেকে তার কোনো সন্ধান মিলেনি।  তৃপ্তির পিতা ওই দিন দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন (ডায়েরি নং ১২৮৫)।

গত বুধবার দোয়ারাবাজারে নারীর লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দোয়ারাবাজার থানায় গিয়ে মেয়ের মরদেহ সনাক্ত করেন পরিতোষ ধর। দোয়ারাবাজার থানার ওসি সুশীল রঞ্জন দাস বলেন, আমরা অর্ধগলিত অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করি সম্ভবত পানিতে ভাসতে ভাসতে লাশটি এদিকে এসেছে। মরদেহ সনাক্ত করতে না পারায় ডিএনএ সংগ্রহ করি। বৃহস্পতিবার তৃপ্তির পিতা পরিতোষ ধর ও তার পরিবারের লোকজন আসেন। লাশের কাপড় দেখে পরিবারের লোকজন তাকে সনাক্ত করে। তারা সুনামগঞ্জ থেকে লাশ নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেছেন। সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল বলেন, তৃপ্তির বাবার দায়ের করা মামলায় স্বামী রিংকু ধরকে গ্রেপ্তার করে বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনমালিন্যের কারণে তৃপ্তি আত্মহত্যা করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn