হবিগঞ্জের : হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার মনতলা ইসলামিয়া মহিলা মাদ্রাসার ছাত্রী ইয়াসমিনের হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। অপহরণকারীর হাত থেকে বাঁচতে ৩ অক্টোবর চলন্ত সিএনজি অটোরিকশা থেকে লাফ দিয়ে রাস্তায় পড়ে তার মৃত্যু হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ইব্রাহিম মিয়া নামে একজনকে গ্রেফতার করার পর মাদ্রাসাছাত্রীর মৃত্যুর রহস্যের জট খুলেছে। উপজেলার রাজনগর গ্রামের মালু মিয়া ছেলে ইব্রাহিমকে (১৪) মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে রোববার রাতে মনতলা থেকে গ্রেফতার করে তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক গোলাম দস্তগীর আহমেদ। সোমবার বিকালে ইব্রাহিমকে হবিগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে হাজির করেন তদন্ত কর্মকর্তা। সেখানে ইব্রাহিম ১৬৪ ধারায় ইয়াসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় তার জড়িত থাকার বিষয়ে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে ইব্রাহিম জানান, রাজনগর গ্রামের ফরিদ মিয়ার ছেলে মোবারকের (২৫) সঙ্গে পার্শ্ববর্তী মেরাশানী গ্রামের ইয়াসমিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মোবারক  সম্পর্কে ইব্রাহিমের মামা হয়। পেশায় সিএনজি চালক। ঘটনার দিন ৩ অক্টোবর সকালে মোবারক ইব্রাহিমকে ডেকে নিয়ে সিএনজি অটোরিকশায় করে মনতলা রেললাইন এলাকায় যান। এর কিছুক্ষণ পর অটোরিকশায় এসে উঠে ইয়াসমিন।

গাড়িতে ওঠার পরই অটোরিকশাচালক মোবারক ইয়াসমিনকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু ইয়াসমিন ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে তাকে নামিয়ে দিতে বলে। এ সময় সে বেপরোয়া গতিতে অটোরিকশা চালাতে থাকে। এ সময় আতঙ্কে ইয়াসমিনের চলন্ত গাড়ি থেকে রাস্তায় ঝাঁপ দেয় ইয়াসমিন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। এ সময় মোবারক গাড়ি নিয়ে মাধবপুর হয়ে আদাঐর চলে আসে। এলাকাবাসী ইয়াসমিনকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইয়াসমিনকে বহনকারী সিএনজি অটোরিকশা রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আটক করেছেন। এ ঘটনায় ইয়াসমিনের মা আয়েশা বেগম বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামি করে আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে মাধবপুর থানায় ১৫ অক্টোবর মামলাটির এফআইআর হয়। মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় থানার পরিদর্শক তদন্ত গোলাম দস্তগীর আহমেদকে। এর পরই তদন্ত কর্মকর্তা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে মোবারকের সহযোগী  ইব্রাহিমকে গ্রেফতার করে। মাধবপুর থানার ওসি মো. ইকবাল হোসেন বলেন, মাদ্রাসাছাত্রী ইয়াসমিনের মৃত্যুর রহস্যের জট খুলেছে। গ্রেফতারকৃত একজন আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দি দিয়েছে। ঘটনার মূল হোতা মোবারককে শিগগিরই গ্রেফতার করা হবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn