বার্তা ডেস্ক: মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান ব্যর্থ করে দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, নির্বাচনের ফল উল্টে দেয়াটা ‘অগ্রহণযোগ্য’ এবং অভ্যুত্থানের নেতাদের বোঝাতে হবে যে, একটি দেশকে শাসন করার এটা কোন পদ্ধতি নয়। খবর বিবিসি বাংলা’র।

জাতিসংঘের মহাসচিব মিয়ানমারে সাংবিধানিক নীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তিনি আশা করছেন যে নিরাপত্তা পরিষদে এ বিষয়ে একটি মতৈক্য হবে। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সব সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে আগ্রহী করার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই করবো আমরা। যাতে করে মিয়ানমারের উপর পর্যাপ্ত চাপ প্রয়োগ করে এই অভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করা যায়।’ সামরিক বাহিনী ক্ষমতা নেয়ার পর নির্বাচিত নেতা অং সান সুচিকে গ্রেফতার করা হয়। মিয়ানমারের পুলিশ পরে সুচির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ দায়ের করেছে। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচনের ফল এবং জনগণের ইচ্ছা উল্টে দেয়াটা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য। আমার মনে হয় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে বোঝানো সম্ভব হবে যে, এটি একটি দেশকে শাসন করার কোন পদ্ধতি হতে পারে না এবং এভাবে সামনে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।’ পশ্চিমা দেশগুলো এরইমধ্যে শক্তভাবেই সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছে কিন্তু চীনের বিরোধিতার কারণে নিরাপত্তা পরিষদে এনিয়ে কোন একক সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। পরিষদের ৫টি স্থায়ী সদস্যের মধ্যে চীন একটি যার ভেটো দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে। বরাবরই আন্তর্জাতিক রোষের মুখ থেকে মিয়ানমারকে রক্ষায় ভূমিকা পালন করে আসছে বেইজিং। তারা সতর্কও করেছে যে, অভ্যুত্থানের কারণে দেশটির উপর নিষেধাজ্ঞা বা আন্তর্জাতিক চাপ পরিস্থিতিকে শুধু আরও খারাপের দিকেই নিয়ে যাবে।

সেনা অভ্যুত্থানের নেতা ও সেনাপ্রধান মিন অং লাইং দেশটিতে ১১ সদস্যের জান্তা গঠন করেন। সামরিক বাহিনী এক বছর দেশটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে এবং তাদের নেয়া পদক্ষেপের পক্ষে সাফাই হিসেবে গত নভেম্বরের নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তুলেছেন। ওই নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় সুচির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি এনএলডি। খবর পাওয়া যাচ্ছে যে, সামরিক সরকার দেশটিতে ফেসবুক বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তাদের মতে, সামাজিক যোগাযোগের এই প্ল্যাটফর্মটি ‘স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় প্রতিবন্ধকতা’ সৃষ্টি করছে। এদিকে সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের হাসপাতালগুলো বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা সুচির মুক্তি দাবি করছেন। অনেক চিকিৎসক কাজে ইস্তফা দিয়েছেন। আবার অনেকে মিয়ানমারের স্বল্পদিনের গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে থাকা সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে নির্দিষ্ট প্রতীক পরেছেন।

প্রতিবাদের অংশ হিসেবে তারা কালো কিংবা লাল ফিতা পরেছেন এবং তিন আঙুল দিয়ে স্যালুট দিয়েছেন। এই স্যালুট বিক্ষোভের বিরুদ্ধে পরিচিতি লাভ করেছে। সুচির প্রতি সমর্থন দেখাতে অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে তাদের প্রোফাইল পিকচার বদলে লাল রঙের করে দিয়েছেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn