নিজস্ব প্রতিবেদক : সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের সংখ্যালঘু নিরীহ যুবক জুম্মন দাসের নি:শর্ত মুক্তির দাবীতে সুনামগঞ্জে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। ২৭ মে বৃহস্পতিবার বিকেলে সুনামগঞ্জ পৌরবিপনী মার্কেটে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবী জানানো হয়। ক্যাম্পেইন ফর দি প্রটেকশন ওফ রিলিজিয়াস মাইনোরিটিজ ইন বাংলাদেশ (সিপিআরএমবি) ও রিসার্স এন্ড এমপাওয়ারমেন্ট অর্গ্যানাইজেশন (আরইও) এর যৌথ উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শিক্ষক ঐক্য পরিষদ এর আহবায়ক প্রপেসর ড. অরুন কুমার গোস্বামী। আরো বক্তব্য রাখেন জুম্মন দাসের মাতা নীতিরানী দাস,জুম্মন দাসের স্ত্রী সুইটি রানী দাস,আইনজীবী দেবাংসু শেখর দাশ এডভোকেট,সাংবাদিক সেলিম সামাদ,মানবাধিকার কর্মী পীযুজ কুরী,রিও সংগঠনের ইয়োথ সেক্রেটারী রাজেশ নাহা ও প্রপেসর চন্দন কর প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন,গত ১৭ মার্চ হেফাজত নেতা মামুনুল হক এর বিরুদ্ধে ফেইসবুকে পোস্টিংয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে শাল্লার সংখ্যালঘু যুবক জুম্মন দাসকে গ্রেপ্তার এবং নেয়াগাঁও গ্রামের ৮৭টি বাড়ি,১৭টি মন্দির ভাংচুরসহ লুটতরাজ করা হয়েছে। এই ভাংচুর ও লুটতরাজের সাথে জড়িত ৬৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও অধিকাংশ আসামীরাই জামিনে মুক্তি পেয়ে দিব্ব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু জুম্মন দাস কে এখনও জামিন প্রদান করা হয়নি। আমরা সুনামগঞ্জের ২টি আদালতে যথারীতি যথানিয়মে জামিনের আবেদন করেও জামিন পাইনি। অথচ কাউন্টার মামলার সকল আসামীরা গুরুতর অপরাধ করার পরও জামিনে মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু জুমন দাসের জামিনের আবেদন করেও আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। তারা বলেন,পুলিশের আহবানে শান্তিপ্রিয় নাগরিকগন জুম্মন দাসকে থানা পুলিশে সোপর্দ করেছিলেন। তৎপ্রেক্ষিতে পুলিশ ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করে। কিন্তু ঘটনার এক সপ্তাহের ব্যবধানে কারাগারে আটক থাকাবস্থায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে আইনের অপপ্রয়োগ করত: জুম্মন দাসকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় শ্যুন এরেস্ট দেখানো হয়।

অপরদিকে নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা ভাংচুর ও লুটতরাজের দায়ে নামবিহীন ১৪০০-১৫০০ লোকদের আসামী করে মামলা করা হয়েছে। যে মামলার শুধু তদন্তই হচ্ছে কখনও চার্জসীট শেষ করা যাবে বলে মনে হয়না। যার প্রমাণ

রামু,নাসিরনগর,ভোলা,রংপুর,মুরাদনগরের ঘটনায় আমরা দেখেছি। এসব সহিংসতার ঘটনা ২০১২ সাল থেকে শুরু হয়ে চলতি ২০২১ সাল পর্যন্ত ঘটে যাচ্ছে। প্রত্যেকটি ঘটনার সাথে শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামের ঘটনার একটা মিল রয়েছে। কিন্তু আমরা সংখ্যালঘুরা ন্যায়বিচার পাচ্ছিনা। তারা আরো বলেন,জুম্মন দাস সরকার বা রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে কিংবা কোন ধর্মীয় নাগরিকদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে কোন সমালোচনা করেনি। যার সমালোচনা করেছে বলে দাবী করা হচ্ছে তিনি একাধিক মামলায় অভিযুক্ত একজন ব্যক্তিমাত্র। ব্যক্তি পর্যায়ের এ ঘটনাটিকে নিয়ে হয়রানীমূলক মামলায় তাকে দিনের পর দিন আটক রাখা হয়েছে। আমরা এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করে নিরীহ জুমন দাসের নি:শর্ত মুক্তি ও তার পরিবারের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জোর দাবী জানাচ্ছি।

  

 

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn