শ্রীমঙ্গল উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য ঘোষিত নতুন কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে বিবাহিত এক ছাত্রলীগ কর্মীকে অন্তর্ভূক্তির ঘটনায় ছাত্রলীগের সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বিবাহিত ওই নেতার বিবাহ অনুষ্ঠানের ছবি পোস্ট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও রীতিমতো প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। এ নিয়ে সাধারণ ছাত্রলীগের কর্মীরা ফেসবুকে নানান মন্তব্যও করছেন।

অনুষ্ঠিত সম্মেলনে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদ প্রত্যাশি মো. ওমর ফারুক নোমান ছাত্রলীগের সাধারণ কর্মীদের পক্ষে নতুন কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে বিবাহিত ছাত্রলীগ কর্মীকে অন্তর্ভূক্তির ঘটনায় একটি অভিযোগ মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বরাবরে প্রেরণ করেছেন। এর অনুলিপি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছেও তিনি পাঠিয়েছেন।

লিখিত ওই অভিযোগে নোমান উল্লেখ করেন ‘ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বিবাহিত কোনো ছাত্র সংগঠনের কোনো পর্যায়ের নেতৃত্বে আসার বিধান নেই। এই সংগঠনের নেতৃত্বে আসতে হলে সর্বোচ্চ বয়স ২৯ বছর এবং অবিবাহিত হতে হবে। এই দুটি কারণে আমার ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে স্থান হয়নি’। কিন্তু একই কারণ থাকা সত্বেও নতুন ঘোষিত ছাত্রলীগের উপজেলা কমিটিতে ১ম সহ-সভাপতি পদে বিবাহিত ব্যক্তি আশিক চৌধুরী নাইমকে ছাত্রলীগের দায়িত্বশীল পদে দেয়ায় অনেকেই ব্যথিত হয়েছে। এনিয়ে কেউ কেউ  ক্ষোভও প্রকাশ করেন।

এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আশিক চৌধুরী নাইম তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমার পড়াশোনা এখনও শেষ হয়নি। বিয়ের একটি পানচিনি অনুষ্ঠান হয়েছে মাত্র। এখনও বিবাহ অনুষ্ঠান হয়নি। আমার পড়াশোনা শেষ হওয়ার দুই বছর পর বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করব।তিনি আরও বলেন, ‘আমি প্রতিহিংসার শিকার। আমার মেধা, শিক্ষা, যোগ্যতা ও অতীত রাজনীতির কর্মকাণ্ড বিবেচনা রেখেই আমাকে উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ সভাপতিপদে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে’।

এ প্রসঙ্গে মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো.আসাদুজ্জামান রনি মুঠোফোনে বলেন, ‘এরকম একটি অভিযোগ শ্রীমঙ্গল থেকে পেয়েছি। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব’।বিবাহিত ব্যক্তি ছাত্রলীগের দায়িত্বশীল পদে অন্তর্ভূক্তি নিয়ে রনি বলেন, ‘কমিটি অনুমোদন দেয়ার আগে বিবাহিত ছাত্রের বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তিনি বলেন‘ ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসতে হলে একজন ছাত্রের সর্বোচ্চ বয়স ২৯ বছর এবং অবিবাহিত হতে হবে। কোনও অছাত্র, মাদকসেবী ও বিবাহিত কেউ ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসতে পারবে না এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গলের ছাত্রলীগের সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন ও আমি নিজে কঠোর মনোভাব ব্যক্ত করে বক্তব্য রেখেছি। ‘বিবাহিত কোনও ব্যক্তি ছাত্রলীগের কমিটিতে নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ নেই। ‘বিবাহিত কেউ যদি ছাত্রলীগের কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত হয়ে থাকেন তাহলে তদন্ত করে তাকে বাদ দেয়া হবে’।

গত ৪ মার্চ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ছাত্রলীগের তিন ইউনিটের সম্মেলনের একদিন পর অর্থাৎ ৫ মার্চ রাতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো.আসাদুজ্জামান রনি ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রনি স্বাক্ষরিত শ্রীমঙ্গল উপজেলা, পৌর ও কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করেন। ঘোষিত ওই উপজেলা কমিটিতে মো. মাসুদুর রহমান কে সভাপতি ও রাজু দেব রিটন কে সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব দেয়া হয়। ওই কমিটিতে আশিক চৌধুরী নাইমকে ১ম সহ-সভাপতি পদে দায়িত্ব দেয়া হয়।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn