এর আগে কোনবারই বিপিএলে সিলেটের দলের মালিকানায় ছিলেন না সিলেটের কেউ। এবারই প্রথম খোদ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের পৃষ্ঠপোষকতায় ঢাকঢোল পিটিয়ে আত্মপ্রকাশ হয় সিলেট সিক্সারসের। দল পরিচালনায় যুক্তরা ঘোষণা দেন স্থানীয় ক্রিকেটাররাই পাবেন সবচেয়ে প্রাধান্য।১০ সেপ্টেম্বর সিলেট সিক্সারসের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানেও এই নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় আয়োজকদের। ওইদিনও সিলেটের ক্রিকেটারদের দলে টানার আশ্বাস দেন উদ্যোক্তারা।কিন্তু দিনশেষে মাত্র তিনজন ছাড়া আর কেউই ডাক পাননি সিলেট দলে। এ নিয়ে আক্ষেপ জানিয়েছেন জাতীয় দলের একসময়ের ক্রিকেটার অলক কাপালী। ক্ষোভ জানিয়েছেন ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরাও।এবারের বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে খেলবেন অলক কাপালী। কিন্তু তিনি খেলতে মুখিয়ে ছিলেন নিজ বিভাগ সিলেটের হয়েই। তা আর হচ্ছে না। প্লেয়ার্স ড্রাফটে যে তাকে ডাকেই নি সিলেটের ফ্রেঞ্চাইজি। অলক তবু একটা দল পেয়েছেন।বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়ের নায়ক বাঁহাতি স্পিনার এনামুল হক জুনিয়র থেকে গেছেন একেবারেই উপেক্ষিত। গেল আসরে কুমিল্লায় ব্যাটিং কোচ হিসেবে কাজ করা অভিজ্ঞ রাজিন সালেহকেও যুক্ত করেনি সিলেট।

 অলক কাপালী বলেন, ‘যখন শুনলাম এবারের বিপিএলে সিলেটের মানুষরাই সিলেট ফ্রেঞ্চাইজি কিনেছেন। তখন আমরা যারা সিলেট থেকে বাংলাদেশ দলে খেলেছে আমি, রাজিন ভাই, এনাম, (তাপস ভাই তো আমেরিকায়), আমরা আশা করেছিলাম দল গড়তে আমাদের নিয়ে পৃষ্ঠপোষক অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বসা হবে। কিন্তু দল পরিচালনায় সিলেটের যেসব সংগঠক যুক্ত ছিলেন তারা তা করলেন না।’নিজ শহরেই জাকঝমকপূর্ণ লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠান করে সিলেট সিক্সারস। এতেও আমন্ত্রিত হননি সিলেটের তারকা ক্রিকেটাররা।অলক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এমনকি সিলেট সিক্সারসের লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠানে পর্যন্ত আমাদেরকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি। সিলেট বিভাগের হয়ে এত বছর থেকে খেলছি, বাংলাদেশ দলে খেলেছি। এইটুকু সম্মান তো আমরা পেতে পারতাম।’

সিলেট বিভাগীয় আম্পায়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আশরাফ আরমান প্লেয়ার্স ড্রাফট অনুষ্ঠান দেখে রীতিমতো হতবাক। সিলেটটুডেকে তিনি বলেন, ‘টানা তিনবার স্থানীয় ক্রিকেটার টানার সুযোগেও সিলেট অলককে ডাকল না। আমি খুব অবাক হয়েছি। অলক এখনো সিলেটের সেরা ক্রিকেটার। তাকেই উপেক্ষা করা হলো। অথচ আগে বলা হয়েছিলো স্থানীয়দের প্রাধান্য দেওয়া হবে।’ কেন অলক, রাজিনরা উপেক্ষিত? সিলেট বিভাগীয় ক্রিকেট কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ কোরেশী এ ব্যাপারে বলেন, ‘২০১৫ তে কুমিল্লাকে চ্যাম্পিয়ন করিয়েছিলো অলক। অবশ্য সে দলে থাকতে পারত কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্টের যারা সেখানে ছিলেন তারাই এটা ভালো বলতে পারবেন। ড্রাফটের নিয়মে চাইলেই কাউকে নেওয়া যায় না, সুযোগ পেতে হয়। সেটা হয়ত ঠিকভাবে পাননি। তবে রাজিন সালেহকে মেন্টর হিসেবে রাখা যেত।’

২০১২ ও ২০১৩ সালে বিপিএলের প্রথম দুই আসরে সিলেট রয়্যালস নামে খেলেছিলো সিলেটের দল। শুরুতে আইকন প্লেয়ার হিসেবে অধিনায়কও ছিলেন অলক কাপালী। ২০১৫ সালে সিলেট সুপার স্টার নাম ভিন্ন মালিকানায় বিপিএলে অংশ নেয় সিলেট। সবশেষ বিপিএলে সিলেটের কোন দল খেলেনি। এবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের পৃষ্ঠপোষকতায় সিলেট সিক্সারস নামে খেলবে সিলেট। এই দলের চেয়ারম্যান অর্থমন্ত্রীর ছেলে সাহেদ মুহিত।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn