ছাতক :: শীর্ষস্থানে থাকাটা সব সময় যে গৌরবের হয় না, তার বড় প্রমাণ সুনামগঞ্জ জেলার বজ্রপাত। হাওরাঞ্চলের এই জেলার আরেক বিপদের নাম বজ্রপাত। মার্চ থেকে মে এই তিন মাসে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয় সুনামগঞ্জে। ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যের কারণে সুনামগঞ্জে বজ্রপাতের পরিমাণ প্রাকৃতিকভাবেই বেশি। ভারতের খাসি পাহাড় ও মেঘালয় এলাকায় মার্চ থেকে মে মাসজুড়ে মেঘ জমে থাকে। স্তরীভূত মেঘে মেঘে ঘর্ষণের ফলে ওই এলাকার পাদদেশে অবস্থিত সুনামগঞ্জে বজ্রপাতের সংখ্যাও বেশি হয়ে থাকে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারনা। চলতি বছরের গত দেড় মাসে অন্তত ৬৬ জন নিহত হয়েছেন। নিহতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি সুনামগঞ্জে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও আবহাওয়া অধিপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ২০১০ থেকে এ পর্যন্ত বজ্রপাতের সংখ্যা ও প্রাণহানির হিসাবে সুনামগঞ্জ সর্বোচ্চ বজ্রপ্রবণ জেলা। গত ১৬ বছরে এই জেলায় মোট বজ্রপাতের ৪ দশমিক ৮২ শতাংশ ঘটে। এরপরই আছে সিলেট (৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ), রাঙামাটি (৩ দশমিক ৬০ শতাংশ), নেত্রকোনা (৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ) এবং দিনাজপুর (২ দশমিক ৬৬ শতাংশ)। আর সবচেয়ে কম আক্রান্ত পাঁচটি জেলা হচ্ছে বরগুনা (শূন্য দশমিক ৩১ শতাংশ), মেহেরপুর (শূন্য দশমিক ৩২ শতাংশ), ঝালকাঠি (শূন্য দশমিক ৩৭ শতাংশ), জয়পুরহাট (শূন্য দশমিক ৪৯ শতাংশ) ও চুয়াডাঙ্গা (শূন্য দশমিক ৫২ শতাংশ)। এদিকে সরকারের উদ্যোগে বজ্রপ্রবণ ৮ স্পটে ৮টি ‘লাইটিং ডিটেক্টর’ স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি ডিটেক্টর ২ হাজার ৫০০ বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে বজ্র ফ্লাশ করলেই তা রেকর্ড করবে। এ ছাড়া তালগাছ রোপণ, একতলা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ ও মোবাইলফোন টাওয়ারের আদলে টাওয়ার বসানোর উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এটিকে বর্তমানে বাংলাদেশের বড় দুর্যোগ মনে করছেন। ২০১৬ সালে একদিনে ৮১ জন মারা যাওয়ার পর বজ্রপাতকে ‘দুর্যোগ’ হিসেবে বিবেচনায় আনা হয়।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn