২০২২ সালের সবথেকে রক্তক্ষয়ী সংঘাত কোনটি? প্রথমেই সবার মাথায় আসবে ডনবাস অঞ্চল নিয়ে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে চলমান যুদ্ধের কথা। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। দ্য ইকোনোমিস্টের এক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ইথিওপিয়ার সংঘাতই গত বছর সবথেকে বেশি রক্ত ঝড়িয়েছে। ২০২০ সাল থেকে ইথিওপিয়ায় বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধ চলছে। এতে ৬ লাখেরও বেশি বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। সেই তুলনায় ইউক্রেনের বেসামরিক মৃত্যুর সংখ্যা একেবারেই কম বলা চলে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনারের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, ইউক্রেনে বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা সর্বোচ্চ ৮ হাজারের বেশি হতে পারে। অথচ ইথিওপিয়ায় এর কয়েক গুণ বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন কিন্তু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তা নিয়ে কোনো রিপোর্টও নেই।

ইথিওপিয়ার টাইগ্রে সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কোনো মাথা ব্যাথা না থাকা নিয়ে উদ্বিগ্ন মানবাধিকার সংস্থাগুলো। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বারবার এ নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলর সমালোচনা করেছে। সেখানে যে গণহত্যা চলছে তার দোষীদের শাস্তির মুখোমুখি করতে আগ্রহ নেই কোনো দেশেরই। এমনকি জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরাঁও একাধিক বার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছেন। দুই বছর ধরে চলা সশস্ত্র সংঘাতটিকে বলা হয় ইথিওপিয়ার ইতিহাসের সবথেকে দীর্ঘ সময় ধরে চলা রাজনৈতিক ও জাতিগত সংঘাত।

এই সংঘাতের কারণে টাইগ্রে অঞ্চল কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এমনকি সেখানে ত্রাণও পৌঁছাতে পারেনি জাতিসংঘ। ইকোনোমিস্ট বলছে, বিশ্বের নজর ছিল শুধু যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের মধ্যেকার ‘গ্রেট পাওয়ার’ দ্বন্দ্ব নিয়ে। অথচ বিশ্বের অন্য প্রান্তে সংঘাতগুলোর অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। কিন্তু বড় শক্তিগুলোর নিজেদের দ্বন্দ্বের দিকেই নজর ছিল বিশ্বের। ইকোমিস্টের হিসেবে গত এক দশকে যুদ্ধের কারণে ১০ কোটিরও বেশি মানুষকে বাড়ি ছাড়তে হয়েছে। এর আগের দশকের তুলনায় এই সংখ্যা দ্বিগুণ।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn