পিচ-খোয়া উঠে স্থানে স্থানে তৈরি হয়েছে খানাখন্দ। সৃষ্টি হওয়া ছোট-বড় গর্তের কারণে ধীরগতিতে যান চলায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। এ অবস্থা সিলেট নগরের সোবহানীঘাট এলাকার। মূলত বন্যার পানিতে দীর্ঘদিন তলিয়ে থাকায় সড়কটি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। সোবহানীঘাট এলাকা ছাড়াও সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের পুলিশ লাইনস, মীরের ময়দান, ইলেকট্রিক সাপ্লাই, শামীমাবাদ, পাঠানটুলা, মদিনা মার্কেট, মীরাবাজার, উপশহর, যতরপুর ও কালীঘাট এলাকার সড়ক ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে। স্থানীয় লোকজন বলেছেন, বন্যার পানি নামার পর সড়কগুলোর ক্ষত বেরিয়ে এসেছে। এসব এলাকা দিয়ে চলাচলে মানুষদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

উপশহর এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার ইসলাম বলেন, গত ১৫ জুন সিলেট নগরে বন্যা দেখা দিয়েছিল। তবে বন্যার পানি কয়েক সপ্তাহ আগে নেমে গেলেও ভাঙাচোরা সড়ক মেরামতে সিটি করপোরেশন কোনো ধরনের উদ্যোগ নেয়নি। ফলে প্রতিদিন চলাফেরা করতে গিয়ে নগরবাসীকে দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এ ছাড়া ভাঙাচোরা সড়কে যান চলাচল করায় সড়কগুলো আরও বেহাল হয়ে পড়ছে। দ্রুত সড়কের খানাখন্দ সংস্কার এবং বিধ্বস্ত সড়ক পুনর্র্নিমাণে কাজ শুরু করা উচিত।

সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল শাখার তথ্য অনুযায়ী, নগরের পুরোনো ২৭টি ওয়ার্ডের পাশাপাশি নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত ১৫টি ওয়ার্ড মিলিয়ে সর্বমোট ৪২টি ওয়ার্ড রয়েছে। বন্যার পানিতে এসব ওয়ার্ডের মোট ১২৭ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব সড়ক সংস্কারে মোট ৪০০ কোটি টাকা খরচ পড়বে। সব মিলিয়ে ৪২টি ওয়ার্ডে সিটি করপোরেশনের ৯৯০ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, নগরের বন্যাকবলিত বেশির ভাগ এলাকার সড়ক বিধ্বস্ত হয়েছে। যেসব সড়ক বন্যা শুরু হওয়ার আগে ভাঙাচোরা ছিল, সেসব সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খানাখন্দময় সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি, অটোরিকশাসহ শত শত যানবাহন চলে থেমে থেমে। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কের খানাখন্দে পানি জমে যানবাহন চলাচলের সময় ছিটকে পড়ে। এতে পথচারীদের কাপড় নোংরা হচ্ছে।

ভাঙাচোরা সড়কের আশপাশের বাসিন্দা ও কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বন্যার পানিতে সড়কের বিটুমিন-কার্পেটিং উঠে যাওয়ায় মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। এসব সড়কে বিশেষত রাতের বেলায় প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনাও ঘটছে।

সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, নগরের কোন কোন এলাকায় বন্যায় সড়ক বিধ্বস্ত হয়েছে, এর জরিপকাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। ভাঙাচোরা সড়ক সংস্কার বা পুনর্র্নিমাণে কত টাকা ব্যয় হবে, তা–ও নির্ধারণ করা হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে সব সড়ক মেরামতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn