মাসুম হেলাল-

সুনামগঞ্জ-২ আসনে নির্বাচন জমে ওঠার পর থেকে প্রচারণার শেষ দিনে এসেও  হেভিওয়েট নেতাদের নিয়ে প্রচারণা চালিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী জয়া সেনগুপ্তা। জয়া সেনের বিপরীতে স্থানীয় শুভাকাক্সিক্ষদের নিয়ে ভোটের মাঠে ছিলেন একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুব হোসেন রেজু।
বিশিষ্ট পার্লাইেমন্টারিয়ান সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মৃত্যুতে তাঁর শূন্য আসনে নৌকা নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন তাঁর স্ত্রী জয়া সেন। জাতীয় পার্টি ও জাসদ নির্বাচনে প্রার্থী দিলেও আ.লীগকে সমর্থন দিয়ে প্রতিদ্বন্দিতা থেকে সরে দাঁড়ায়। কিন্তু প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এক সময়ের একনিষ্ট ভক্ত কুয়েত প্রবাসী মাহবুব হোসেন রেজু থেকে যান লড়াইয়ে মাঠে। শুরুর দিকে নিরুত্তাপ নির্বাচনী আবহ থাকলেও স্থানীয়ভাবে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের একাংশ রেজুকে সমর্থন দিলে জমে লড়াই ওঠে। নড়েচড়ে বসে আওয়ামী লীগ। কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতারা ছুটে যান দিরাই-শাল্লায়।
নির্বাচনকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটে যান তাঁরা। এছাড়া দলীয় কোন্দলের কারণে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণায় শুরুর দিকে খাপছাড়া ভাব থাকলেও শেষ মুহূর্তে এসে নেতাদের মধ্যেকার দূরত্ব অনেকাংশে কমে যাওয়ায় বেশ স্বস্থিতে আছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী।
অপরদিকে, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জীবদ্দশায় উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েজন নেতার একচ্ছত্র আধিপত্যের কারণে কোণঠাসা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের একাংশ যোগ দেয় স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুব হোসেন রেজুর সঙ্গে। রেজুর ‘লিড ভোকালের’ দায়িত্ব নেন দীর্ঘ ১৭ বছর উপজেলা আওয়ামী লীগে দায়েত্বে সভাপতির দায়িত্বে থাকা (বর্তমানে সাবেক) আলতাব উদ্দিন মাস্টার।  একপর্যায়ে এসে রেজু পক্ষে যোগ হয় স্থানীয় বিএনপির সমর্থন। জীবদ্দশায় দিরাই ও শাল্লা উপজেলায় সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের প্রধান প্রতিদ্বন্ধি জেলা বিএনপির আহবায়ক সাবেক এমপি নাছির উদ্দিন চৌধুরী পরোক্ষ সমর্থন দেন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে। দুই উপজেলায় নাছির চৌধুরী অনুসারী বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনে নেতা-কর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে অনেকটা প্রকাশ্যেই ভোটের মাঠে সক্রিয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, স্থানীয় রাজনীতির হিসাব নিকাশের কারণে শুরুর দিকের নিরুত্তাপ নির্বাচনে দুই প্রার্থীর মধ্যে সময় প্রতিদ্বন্দিতা থাকলেও বর্তমানে ভোটের লড়াই অনেকটা জমজমাট।  যে কারণে আওয়ামী লীগের ‘বাইরের ঐক্য’ আর ‘ভেতরের ঐক্য’ শেষ পর্যন্ত এক সূতোয় বাঁধা থাকা না থাকার ও পর নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফল কোন দিকে যায়।
এদিকে, গতকাল আ.লীগ প্রার্থী জয়া সেন শাল্লা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রচারণা চালিয়েছেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বদর উদ্দিন কামরান, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা জগদীশ দাস প্রমুখ। তাঁর পক্ষে দিরাইয়ে বিভিন্ন স্থানে প্রচারণা চালিয়েছেন সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমন প্রমুখ।

সোমবার জয়া সেনের পক্ষে দিরাইয়ে প্রচারণা করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, মুক্তিযোদ্ধা সালেহ চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ মতিউর রহমান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট, সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আয়ুব বখত জগলুল, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সফিউল আলম নাদেল প্রমুখ।  অপরদিকে, গতকাল স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুব হোসনে রেজু  গণসংযোগ ও সভা করেছন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন, দিরাই উপজেলা আ.লীগের সাবেক সভাপতি আলতাফ উদ্দিন মাস্টার, বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নূরুল হক তালুকদার, সিলেট মহানগর যুবলীগ নেতা হুমায়ূন রশিদ লাভলু, কামরুজ্জামান, যুবদল নেতা জালাল উদ্দিন প্রমুখ।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn