জামালগঞ্জ :জামালগঞ্জের ফেনারবাক ইউনিয়নের পাগনার হাওরের জলাবদ্ধতা ও হাওরের বিভিন্ন বেরী বাঁধের স্থান পরিদর্শন করলেন হাওর এডভোকেসি প্লাটফর্ম (হ্যাপ) এর প্রতিনিধি দল। গত শুক্রবার দিনব্যাপী জামালগঞ্জের ফেনারবাকের ইউনিয়ন ও দিরাইয়ের রফিনগর ইউনিয়নের পাগনার হাওরের বিভিন্ন স্লুইসগেইট বেরীবাঁধ বিভিন্ন আপর বাঁধ। ফেনারবাকের গজারিয়া স্লুইসগেইট,গজারিয়া ক্লোজার, কাইল্লানী, বোগলাখালী, ডালিয়ার স্লুইসগেইটসহ বিভিন্ন বাঁধ ও আপর বাঁধ। স্থানগুলো পরিদর্শনের সময় হাওর পাড়ের বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন প্রতিনিধি দলের কাছে। হ্যাপের প্রতিনিধি দলে ছিলেন- হাওর এডভোকেসী ফ্লাটফর্মের যুগ্ম আহবায়ক ও বিশ্লেষক শরিফুজ্জামান শরীফ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, পানি ও বাধ বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী সর্দার আমিন। এসময় গাজী টেলিভিশনের ষ্টাফ রির্পোটার, প্রথম আলোর জেলা প্রতিনিধি এড: খলিলুর রহমান, স্থানীয় গনমাধ্যম ও হাওর উন্নয়ন কর্মী আকবর হোসেন প্রমুখ।

জলাবদ্ধতার বিষয়ে আমানীপুরের কৃষক মঙ্গল মিয়া ও আবারক হোসেন বলেন- আমরা অতীতেও হাওরের বাঁধে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করেছি। এবারও পানি নিস্কাসনে কাজ করছি। আমরা হাওরের বাধের কাজ আর স্বেচ্ছাশ্রমে কত করবো। বার বার আমাদের ফসলহানী হচ্ছে, ফসলের মায়ায় আমরাসহ আশপাশের গ্রামের মানুষরা বাঁধে পড়ে থাকে। স্থানীয় লক্ষীপুর গ্রামের গনমাধ্যমকর্মী দিল আহমেদ জানান- প্রথমে পানি নিষ্কাশনে এলাকার কৃষকেরা কাজ করেছে স্বেচ্ছাশ্রমে। এ বিষয়ে কাল (শনিবার) লক্ষীপুরে মিটিং ডেকেছে ফেনারবাকের চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু তালুকদার। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিহির বিশ্বাস বলেন- ভারতের মেঘালয় পাহাড় থেকে আগে নদী দিয়ে পানি নামতো, এখন বিভিন্ন ধাতব পদার্থ, বালু, কালো মাটি নামে। এগুলো আমাদের নদীর তলদেশ ভরে গেছে। তাই নদী দিয়ে পানি চলাচল কমে গেছে। তাছাড়া বেশি করে গাছ কাটার ফলে পরিবেশ ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে।পানি ও বাঁধ বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী সর্দার আমিন বলেন- কাজ হচ্ছে অপরিকল্পিত। এভাবে চলতে থাকলে দিন দিন আরো ক্ষতিতে পড়বে কৃষক পরিবারগুলো। এখন থেকে পরিকল্পনা করে হাওরের বেরীবাঁধ ও স্লুইসগেইটগুলোর কাজ করতে হবে।
 
হাওর এডভোকেসী প্লাটফর্মের যুগ্ম আহবায়ক ও বিশ্লেষক শরিফুজ্জামান শরীফ বলেন- গেল বার বাঁধের কাজ চলাকালীন সময়ে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওরের বাঁধ ও হাওর ডুবির পর আবারো ঘুরেছি বিভিন্ন গ্রামে। এখন থেকেই আমাদের সুষ্ট পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন চাই। নদীখনন, স্লুইসগেইট গুলো কার্যকর, বেরী ও আপর বাঁধগুলো স্থায়ীকরণ করার উদ্যোগ নিতে হবে। সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসকের সাথে সাক্ষাত করে বিষয়গুলো তুলে ধরবো। উল্লেখ্য, জলাবদ্ধতা নিরসনে সাম্প্রতিক সময়ে স্থানীয় পাগনার হাওর পাড়ের বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা বোরো মৌসুমের ফসল ফলাতে নিজ উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমে পাগনার হাওরের পশ্চিম দক্ষিণ পাড়ের ডালিয়া স্লুইসগেইট সংলগ্ন ক্লোজারের নিকট, শমি পুরের সামনের কাড়া, ফুলিয়া টানাসহ কয়েকটি অংশে কাজ করেছেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn